দুই দিন ধরে ঈদযাত্রার চাপ থাকলেও এখন অনেকটাই ফাঁকা ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বুধবার সকালে প্রায় ৩০ কিলোমিটার অংশ জুড়ে যানবাহনের জটলা থাকলেও বৃহস্পতিবার সে চিত্র একেবারেই নেই; বরং স্বাভাবিক গতিতেই চলছে ছোট-বড় গাড়ি।
মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, চলমান যানগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি। কিছু ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান চলছে। তবে পণ্য নিয়েই। মানুষের জটলা চোখে পড়ার মতো নয়।
তবে রাস্তায় চলতে দেখা গেছে দূরপাল্লার কিছু বাস। যদিও পুলিশের দাবি, তাদের নজরদারি অব্যাহত আছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, ‘মহাসড়কে যানবাহন চলাচল আজকে একেবারেই স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও যানবাহন আটকে নেই। তবে গত দুই দিন গাড়ির প্রচুর চাপ দেখা যায়।
‘এক ঘণ্টার রাস্তা চার-পাঁচ ঘণ্টা ধরে লোকজন পার হয়েছেন। কিন্তু গতকাল বিকেল থেকেই ধীরে ধীরে গাড়ির চাপ কমতে থাকে। এখন স্বাভাবিকভাবেই গাড়ি চলাচল করছে হাইওয়েতে।’
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কও এখন প্রায় স্বাভাবিক। গত দুই দিনের তুলনায় কমেছে যানবাহন। তবে বাড়ি ফিরতে গাড়ির অপেক্ষায় আজও সড়কের পাশে বসে-দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় অনেককে।
এমন এক যাত্রী কামাল হোসেন। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নোয়াখালী যাবেন তিনি। কাজ করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।
তিনি বলেন, এ মাসে বেতন-বোনাস না পাওয়ায় পকেট প্রায় ফাঁকা। তাই পরিবার নিয়ে বাড়ি ফিরতে কম ভাড়ার যান পেতে অপেক্ষা করছেন।
তিনি বলেন, ‘মাইক্রোবাসে নোয়াখালী যেতে সবচেয়ে কম ভাড়া চাওয়া হয়েছে ৮০০ টাকা। পকেটে আছেই ৭০০ টাকা। তাই এখন ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছি।’
দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় গত কয়েক দিন মহাসড়কে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে যাত্রী পরিবহন করেছে ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাসসহ ছোট-বড় বিভিন্ন যান। তাতে ভোগান্তিতে পড়েন কামালের মতো অনেক যাত্রী। তা সত্ত্বেও বাড়ি ফিরেছেন তারা।
তবে বৃহস্পতিবার সড়কে অবাধেই চলতে দেখা গেছে বেশ কিছু বাসকে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মদনপুর, সাইনবোর্ড, শিমরাইল, মোগরাপাড়া, গাউছিয়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাস, পিকআপ, ট্রাক, মাইক্রোবাসে গাদাগাদি করে যাচ্ছেন অনেকে।
নাতিকে নিয়ে ভৈরব যাচ্ছিলেন ষাটোর্ধ্ব সুরাইয়া বেগম। সাইনবোর্ড এলাকা থেকে পেয়েছিলেন একটি অটোরিকশা।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘গাড়ি কম। ট্রাকে উঠতে পারতাম না। তাই চাইর শ ট্যাহা কইরা সিট নিছি সিএনজিতে। ঈদ করতে বাড়িতে যাইতাছি।’
দূরপাল্লার বাসের পাশাপাশি স্থানীয় রুটের কিছু বাসও চলতে দেখা যায় মহাসড়কে।
এমন একটি বাসের চালক মো. জনির সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, গত কয়েক দিন তিন থেকে চার গুণ ভাড়া নেয়া হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার মানুষের চাপ কম থাকায় ভাড়াও কমেছে। বিকেলের পর চাপ বাড়লে তারা আবারও ভাড়া বাড়াবেন।
বাস চালাতে পুলিশের বাধা পাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে নির্বিঘ্নে ছেড়ে গেলেও ভৈরব ও কুমিল্লায় গাড়ি আটক করা হচ্ছে বেশি। এ কারণে ঢাকার অংশে গাড়ির চাপ কমেছে।
পুলিশ বলছে, অতিরিক্ত যাত্রী, বাড়তি ভাড়া ও নির্দেশনা অমান্য করে নামা যানবাহনগুলো নিয়মিতই আটকানো হচ্ছে; জরিমানাও করা হচ্ছে।
ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, সকাল থেকে গাড়ির চাপ তেমন নেই। বিধিনিষেধ না মেনে যেসব গাড়ি চলাচলের চেষ্টা করছে সেগুলো আটকে মামলা দেয়া হচ্ছে।