চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে নাশকতার ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুফতি হারুন ইজাহার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আঞ্জুমান আরার আদালত তার জবানবন্দি নেয়।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক বলেন, ‘হাটহাজারীতে নাশকতায় সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন মুফতী হারুন ইজহার।’
হারুন ইজাহার নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরীর বড় ছেলে।
গত ২৮ এপ্রিল রাতে নগরের লালখান বাজার জামিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার বাসা থেকে হারুন ইজাহারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের প্রতিবাদে সক্রিয় হেফাজত কর্মীরা বায়তুল মোকাররম এলাকায় সরকার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন।
এই সংঘর্ষ চলার সময় হেফাজতের সদরদপ্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা সংলগ্ন মসজিদ থেকে মিছিল নিয়ে গিয়ে সরকারি ডাকবাংলো, এসিল্যান্ড অফিসের পর থানায় হামলা করে হেফাজতকর্মীরা। তখন পুলিশ গুলি চালালে চারজন হেফাজতকর্মী নিহত হন।
সেদিনের সেই ঘটনার পর দেশের আরও নানা এলাকায় সহিংস হয়ে উঠে হেফাজত। হাটহাজারীতে মাদ্রাসার পাশে চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি সড়কে ইটের দেয়াল তুলে দুই দিন তা অবরোধ করে রাখে ছাত্ররা। হামলা হয় ট্রেনে।
হাটহাজারী ছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জসহ নানা এলাকায় ত্রাস তৈরি করে হেফাজত সমর্থক মাদ্রাসাছাত্ররা। এক পর্যায়ে ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হয় পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান।
এর মধ্যে হেফাজত আমির জুনায়ের বাবুনগরী তার সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। শুরুতে সহিংসতার কথা অস্বীকার করলেও পরে এর জন্য তিনি ও তার সংগঠনের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জেহাদী একাধিকবার দুঃখ প্রকাশও করেছেন।