বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মেট্রোরেল নিয়ে জাপানি রাষ্ট্রদূতের উচ্ছ্বাস

  •    
  • ১২ মে, ২০২১ ১০:২৬

নাওকি বলেন, আমরা একটি ঐতিহাসিক প্রকল্পের সমাপ্তির কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। যা সম্পন্ন হলে বাংলাদেশে ঢাকাবাসীই প্রথম বৈদ্যুতিক রেলে চড়ার সুযোগ পাবেন।

ট্রায়াল রানের পর মেট্রোরেল বা এমআরটি লাইন-৬ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।

জাপান দূতাবাসের এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এই উচ্ছ্বাস জানান। মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জের কথা বলতে গিয়ে গুলশানের হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার কথাও স্মরণ করেন তিনি।

গুলশানের হোটেলটিতে সন্ত্রাসী হামলায় যে সাত জাপানি নাগরিক নিহত হন, তাদের মধ্যে ছয়জনই ছিলেন ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পের পরামর্শক।

ফেসবুক পোস্টে ‘বাংলাদেশ প্রথম মেট্রোরেল দেখল’ বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।

তিনি জানান, ঢাকার জন্য এমআরটি লাইন-৬-এর এই বৈদ্যুতিক কোচ তৈরি করেছে কাওয়াসাকি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ, কোবে, জাপান।

নাওকি বলেন, আমরা একটি ঐতিহাসিক প্রকল্পের সমাপ্তির কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। যা সম্পন্ন হলে বাংলাদেশে ঢাকাবাসীই প্রথম বৈদ্যুতিক রেলে চড়ার সুযোগ পাবেন।

কিন্তু এই কাজ সহজ ছিল না বলে জানান তিনি । বলেন, আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ জয় করে আসতে হয়েছে। শুরুতেই সন্ত্রাসী হামলার (গুলশানের হলি আর্টিজান হামলা) শিকার, আর বর্তমান করোনা মহামারি পরিস্থিতি প্রকল্প বাস্তবায়নকে কঠিন করে দেয়। এই ট্রেন বাংলাদেশের চিরায়ত লাল-সবুজের রং আর জাপানের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার প্রতীক হয়ে ঢাকার এ-মাথা থেকে ও-মাথায় ছুটবে।

এটা ঢাকার চেহারার পরিবর্তন আনবে। এই মেট্রোরেল সামনে থেকে ঢাকা শহরের পরিবহন ব্যবস্থা ও অবাকাঠামো ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনে নেতৃত্ব দেবে।

রাষ্ট্রদূত জানান, মেট্রোরেলের কোচগুলো স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি, যা হালকা ওজনের এবং উচ্চ স্থায়িত্ব বৈশিষ্ট্যযুক্ত। যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য এতে অভ্যন্তরীণ সিসিটিভি ক্যামেরা ও বাইরেও সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে। যা বিখ্যাত সনি করপোরেশনের তৈরি। এর র‍্যাপিড পাস ও অটোমেটিক গেট অপরেশন ব্যবস্থার উন্নয়নও করেছে সনি। এ ট্রেনের দরজা যাত্রীরা তাদের হাতের স্পর্শেই খুলতে পারবেন।

তিনি জানান, এতে যোগাযোগভিত্তিক ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম (সিবিটিসি) রয়েছে, যা অত্যাধুনিক সিগনালিং সিস্টেম। যা পিপ্পন করপোরেশনের সিগন্যালিং সিস্টেম দিয়ে উন্নয়ন করা।

সিবিটিসি রেডিও যোগাযোগ ব্যবহার করে উচ্চ ঘনত্বের ট্রেন ট্র্যাফিক পরিচালনা করতেও সক্ষম।

এই ট্রেনে জাপানের তোশিবার তৈরি প্রযুক্তি সঞ্চয় স্থান (ইএসএস) রয়েছে। ইএসএস সিস্টেম ট্রেন ব্রেকিংয়ের মাধ্যমে পুনরুৎপাদনশীল বিদ্যুৎ সঞ্চয় করে ও ট্রেনে দক্ষতার সঙ্গে তা সরবরাহ করে। ব্রেকিং ডিভাইসগুলোর জন্য শক্তি সঞ্চয় ও কম রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ে এই সিস্টেমটি সহায়ক বলে জানান তিনি।

মেট্রো লাইন-৬ ঢাকা শহরকে উত্তর থেকে দক্ষিণে সংযুক্ত করেছে। যার দূরত্ব ২০ কিলোমিটার ও ১৬টি স্টেশন রয়েছে। যা উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ৩৬ মিনিটে যাবে।

জাপানি সংস্থাগুলো ট্রেনের উত্পাদন ও বিতরণ, ট্রেনের ডিপো ও স্টেশন ভবন নির্মাণ, মূল লাইনের একটি অত্যাবশ্যক অংশের প্রধান নির্মাণ কাজ, সিগন্যালিং ও টিকিট গেট সিস্টেমের মতো বড় সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য চুক্তি করেছিল।

চুক্তির আওতায় কাওয়াসাকি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ মোট ১৪৪টি রেল কোচ তাদের কোবের কারখানা তৈরি করছে। যার প্রথম ব্যাচটি ৩ মার্চ কোবে বন্দর থেকে রওনা হয়ে ২১ এপ্রিল ঢাকায় পৌঁছে।

মঙ্গলবার উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেলের আনলোডিং এরিয়ায় প্রথমবারের মতো ট্রায়াল রান করায় মেট্রোরেল। দেশে আসা নতুন এই গণপরিবহনটির ভেতরটাও দেখার সুযোগ মেলে এ দিন।

মেট্রোরেলে প্রতিটি সেটে থাকবে চারটি যাত্রীবাহী কোচ, দুই দিকে দুটো ইঞ্জিন। ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতি বর্গমিটারে আটজনের হিসাবে ব্যস্ততম সময়ে প্রায় ১ হাজার ৭০০ যাত্রী চলাচল করতে পারবেন।

ট্রেনগুলো চলবে ডিসি ১৫০০ ভোল্ট বিদ্যুতে; আর এটিই দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রেন।

মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশন হবে-উত্তরা দিয়াবাড়ি, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর-১০ নম্বর, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, সোনারগাঁও, শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম ও মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকায়।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি কোচের দুপাশে আছে সুপরিসর চারটি দরজা। তবে স্টেশনে এলে একপাশেই খুলবে। ট্রেন থাকবে প্ল্যাটফর্মের সমতলে, ফলে সাধারণ ট্রেনের মতো সিঁড়ির প্রয়োজন হবে না। থাকবে দুটি করে হুইলচেয়ার।

এ বিভাগের আরো খবর