মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বগুড়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় সদর উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. আমিনুল ইসলামসহ ৩০ জনকে জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের ছয় মাসের জামিন দেয়।
আদালতে জামিন আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মিনহাদুজ্জামান লিটন, অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।
আমিনুল ইসলামসহ এই ৩০ জনের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট থেকে জামিন জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি হাইকোর্টের দৃষ্টিতে এলে গত ২৪ ফেব্রুযারি হাইকোর্ট এক আদেশে যুবলীগের সহ-সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) ও কাউন্সিলর মো. আমিনুল ইসলামসহ ৩০ আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়।
এই আদেশ বাস্তবায়ন করে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে বগুড়ার মুখ্য বিচারিক হাকিমকে বিষয়টি তদন্ত করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
হাইকোর্টের সে আদেশের পর ৩ ও ৪ মার্চ আসামিরা বগুড়ার আদালতে আত্মসমর্পন করেন। ওই আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। সেই থেকে তারা কারাবন্দী। এ অবস্থায় হাইকোর্টে তাদের জামিনের আবেদন করা হয়।
জামিন আবেদনের শুনানিতে আইনজীবী মিনহাদুজ্জামান লিটন আদালতকে বলেন, ওই জামিন জালিয়াতির ঘটনা সিআইডি তদন্ত করেছে। তাতে এই আসামিদের কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি। তাদের পক্ষে ওই সময়ে যে আইনজীবী নিয়োজিত ছিলেন তিনি ও কয়েকজন কর্মচারি ওই ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। পরে আদালত তাদের জামিন দেয়।
বগুড়ায় মোটরমালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ১০ ফেব্রুয়ারি পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি তিনটি মামলা হয়।
এর মধ্যে একটিতে আমিনুলকে প্রধান আসামি করে ৩৩ জনের নামে মামলা করেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ছোট ভাই মশিউল আলম দীপন।
এই মামলায় হাইকোর্ট থেকে আমিনুল ইসলামসহ ৩০ জনের জামিন নেওয়ার একটি আদেশনামা (জামিন আদেশ) তৈরি করা হয়। আদেশনামায় দেখানো হয়েছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে আসামিদের ছয় সপ্তাহের জামিন দেওয়া হয়েছে। এই জামিন শেষে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিষয়টি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ধরা পড়ার পরপরই বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামিদের গ্রেপ্তারের আদেশ দেয়।