বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তরমুজ সিন্ডিকেট ভাঙল যেভাবে

  •    
  • ১০ মে, ২০২১ ২১:১৭

দুর্বার হাটের উদ্যোক্তা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘আমরা সামান্য লাভ করেছি। মূলত বোঝাতে চেয়েছি সিন্ডিকেট কীভাবে লাভ করছে। ওই সিন্ডিকেট ভাঙতে চেয়েছি। এই উদ্যোগে বাজারে তরমুজের দাম কমে গেছে।’

মাঝারি আকারের তরমুজ। ওজন ৪ থেকে ৫ কেজি। বিক্রি হচ্ছে মাত্র একশ টাকায়।

কুষ্টিয়ায় ক্রেতার হাতে এই দামে তরমুজ তুলে দিচ্ছে সংগঠন দুর্বার হাট। এতে ভেঙে পড়েছে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। তারাও কম দামে তরমুজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।দুর্বার হাটের উদ্যোক্তা ইব্রাহিম হোসেন মিরাজ জানান, নাটোরের চাষিদের কাছ থেকে তারা ৪ মে তরমুজ কেনেন। পরে ট্রাকে করে কুষ্টিয়ায় এনে ১০০ টাকা পিস বিক্রি করেছেন। এসব তরমুজ মাঝারি সাইজের। ওজন ৪ থেকে ৫ কেজি।৭ মে থেকে পিকআপে করে শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে ঘুরে তারা তরমুজ বিক্রি করেছেন। হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দেয়ায় ক্রেতাদের মাঝেও ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে।শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বর এলাকার সাব্বির মোহাম্মদ কাদেরি সস্তায় তরমুজ কিনে খুশি। তিনি বলেন, রমজানের শুরুতে এ উদ্যোগ নিলে ভাল হতো। মানুষ ন্যায্যমূল্যে তরমুজ কিনতে পারত।

মুহাম্মদ গোলাম কায়েস বলেন, রোজা শেষের দিকে এখন এমনিতেই তরমুজের দাম কমে যাচ্ছে। তারপরও এটি ভাল উদ্যোগ।হাটের উদ্যোক্তা ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা সামান্য লাভ করেছি। মূলত বোঝাতে চেয়েছি সিন্ডিকেট কীভাবে লাভ করছে। ওই সিন্ডিকেট ভাঙতে চেয়েছি। এই উদ্যোগে বাজারে তরমুজের দাম কমে গেছে।’

উদ্যোগ বাস্তবায়নের সময় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার কথা জানিয়ে ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘জেলা প্রশাসক সরাসরি সম্পৃক্ত না হলেও সহযোগিতা করেছেন। আমরা যারা এ কাজটি করেছি, কেউ ব্যবসায়ী না।

‘আমাদের আড়ৎ নেই। ক্ষেত থেকে নিয়েই আমরা বিক্রি শুরু করেছি। তাই অনেকে তরমুজের রঙ লাল পাননি। সবাইকে বলে দেয়া হয়েছে দুই-তিন দিন বাসায় রেখে তারপর কাটতে।’

ইব্রাহিম জানান, ১০ মে পর্যন্ত তরমুজ এভাবে বিক্রি হয়েছে। দরকার হলে আবার চালান এনে একইভাবে বিক্রি করা হবে। বাজারেও তরমুজের দাম কিছুটা পড়েছে। মাঝারি আকারের তরমুজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

কুষ্টিয়া পৌর বাজারের সামনে আলম হোসেন তরমুজ বিক্রি করছেন ৩০ টাকা কেজি। ভাল মানের বড় আকারের তরমুজ বিক্রি করেছেন ৪০ টাকা কেজি। শহরের হাসপাতাল মোড়ে বিক্রেতা আইনাল হোসেন বিক্রি করেছেন ৩৫ টাকা কেজি। এর আগে অভিযান চালিয়েও দাম কমানো যায়নি তরমুজের।জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৬ এপ্রিল চার তরমুজ ব্যবসায়ীকে ১১ হাজার টাকা জরিমানা করেন। সে সময় তরমুজ বিক্রি হচ্ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে।

রমজানের এক সপ্তাহ আগেও তরমুজ ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সে সময় তুলনামূলক বড় ও ভালো মানের তরমুজ বিক্রি হয়েছে ২৭ থেকে ৩০ টাকা কেজি।

রমজান শুরু আগেই দাম বেড়ে ৩৫-৪০ টাকায় চলে যায়। এভাবে বাড়তে বাড়তে তরমুজের কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় ওঠে।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. বনি আমিন ও রিজু তামান্না ২৬ এপ্রিল দুপুরে অভিযান পরিচালনা করেন। বনি আমিন বলেন, কেজিপ্রতি ২০ টাকাও লাভ করেছেন কেউ কেউ।

কথা হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অংশ নেয়া কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া জেলা বাজার কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী ফলের ক্ষেত্রে কেজিতে ১০ টাকা লাভ করতে পারবেন এমন বিধান রয়েছে। তবে তরমুজের ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা আছে। কেজিপ্রতি তিন থেকে পাঁচ টাকার বেশি লাভ করা যাবে না। আর কেজি বা পিস যেভাবেই কেনা সেভাবেই বিক্রি করতে হবে।’মেহেরপুরের গাংনীতে পৌরসভার উদ্যোগে তরমুজ কিনে সস্তায় বিক্রি করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরাও যখন ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করছিলেন গাংনী পৌরসভা তখন ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রির উদ্যোগ নেয়। এ উদ্যোগ বাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

এ বিভাগের আরো খবর