বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাবা নাই, মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে হবে

  •    
  • ১০ মে, ২০২১ ২০:৪৭

সোহান নামে এক যাত্রী বলেন, ‘দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় একটা নোহা গাড়ি ভাড়া করেছি ছয়জনে মিলে। ভাড়া ২০ হাজার টাকা। আমাদের খরচ পড়ছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার করে। ছয় গুণের এ ভাড়া আমাদের সামর্থ্যের বাইরে।’

দূরপাল্লার বাস বন্ধ। টাকা বেশি লাগে লাগুক। ভেঙে ভেঙে যেতে হবে, তাতে কী? তারপরও বাড়ি যেতেই হবে।

সোমবার বিকেলে টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস এলাকায় মাইক্রোবাসে বসে কথাগুলো বলছিলেন সোহান নামের এক যাত্রী।

সোহানের বাড়ি নাটোরে। থাকেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। সেখানে ধান কাটার মেশিন দিয়ে ব্যবসা করেন। ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে বাড়ি ফিরছিলেন মাইক্রোবাসে করে।

নিউজবাংলাকে সোহান জানান, ঢাকা থেকে নাটোরের দূরত্ব ২১১ কিলোমিটার। এই রুটে আগে বাস ভাড়া ছিল ৩০০ টাকা। করোনার সময়ে সেই ভাড়াই হয়েছে সাড়ে ৫০০ টাকা। কিন্তু লকডাউনের কারণে এখন বাসও বন্ধ।

তিনি বলেন, ‘দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় একটা নোহা গাড়ি ভাড়া করেছি ছয়জনে মিলে। ভাড়া ২০ হাজার টাকা। আমাদের খরচ পড়ছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার করে। ছয় গুণের এ ভাড়া আমাদের সামর্থ্যের বাইরে।

‘কিন্তু কী করার আছে, বাড়িতে বাবা নেই। আছে শুধু মা। তাই বাড়ি ফিরছি মায়ের সঙ্গে ঈদ করব দেখে।’

ভোগান্তি হলেও পরিবার নিয়েই বাড়ি ফিরছেন অনেকে। ছবি: নিউজবাংলা

শুধু সোহানই নয়, তার মতো হাজার হাজার মানুষ নানা ভোগান্তি উপেক্ষা করে করোনা সংক্রমণের মধ্যেই ঢাকা ছাড়ছেন। তবে এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা।

একাধিকবার গাড়ি বদলের পাশাপাশি কয়েক গুণ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের। তবে তাতেও কারও অভিযোগ নেই। বাড়ি ফিরতে পারলেই যেন মুক্তি।

ঢাকা-টাঙ্গাইল হাইওয়ের ঘারিন্দা, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, করটিয়া হাট বাইপাস, জামুর্কী, পাকুল্লা, নাটিয়াপাড়া, মির্জাপুর, গোড়াই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, প্রাইভেট কার, হায়েস, নোহা, সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে বাড়ি ফিরছেন হাজার হাজার মানুষ। মোটরসাইকেলে করেও যাচ্ছেন অনেকে।

রাস্তায় খালি ট্রাক ও পিকআপ দেখলেই দৌড়ে যাচ্ছেন অনেকে। হাত উঁচু করছেন থামার জন্য। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে একসঙ্গে গাদাগাদি করেই ফিরছেন বাড়ি।

টাঙ্গাইলের ধূলের চর মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইব্রাহিম বলেন, ‘বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করব। যত কষ্টই হোক বাড়ি তো যেতেই হবে। তবে এবার কষ্টটা একটু বেশিই হচ্ছে।

‘তিন ভাগে আমাকে সিরাজগঞ্জ যেতে হচ্ছে। আগে সুন্দর একবারে বাসে চড়ে যেতে পারতাম কিন্তু এবার প্রথমে অটোরিকশা, তারপর মোটরসাইকেলে এবং পুনরায় আবার সিএনজিতে করে বাড়ি যেতে হবে। তবুও আমি খুশি।’

রহিমা বেগম নামে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক নারী যাত্রী বলেন, ‘কঠোর লকডাউন ও ঈদ উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই কষ্ট হলেও বাড়ি যাচ্ছি সবার সাথে ঈদ করতে। তবে বাড়িতে যেতে ভোগান্তির পাশাপাশি খরচও হচ্ছে কয়েক গুণ বেশি টাকা।’

অটোরিকশার চালক তোফাজ্জল বলেন, ‘বাস বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ মানুষ ভাইঙ্গা ভাইঙ্গা বাড়িতে যাচ্ছে। তাই আমাগো এবার কামাই বাড়ছে।’

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, ‘হাইওয়েতে সাড়ে ৭০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোথাও যেন যানজটের সৃষ্টি না হয় সেদিকে আমাদের দৃষ্টি রয়েছে। হাইওয়ের কোথাও গাড়ি থামাতে দেয়া হচ্ছে না।’

এ বিভাগের আরো খবর