ঈদের আগে প্রতিটি ঘাটে উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যে অবশেষে যাত্রী নিয়ে ফেরি চলাচলে অনুমতি দিল সরকার।
নিউজবাংলাকে সোমবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) পাটুরিয়া ঘাটের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জিল্লুর রহমান।
সরকারি নির্দেশ আসামাত্র সবফেরি চালু করে দিয়েছে পাটুরিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ।
জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি বাড়ানো হয়েছে। এই নৌরুটে ১৬টি ফেরির মধ্যে আটটা ফেরি দিয়ে লাশবাহী, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি কাজে নিয়োজিত যানবাহন পার করা হচ্ছে। এর আগে ছয়টা ফেরি চলাচল করত।
বিআইডব্লিউটিসি গত শুক্রবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, শনিবার থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। রাতে শুধু পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারের জন্য ফেরি চলবে।
এরপর শনিবার বিজিবির পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান ঘোষণা দেন, ফেরিতে যাত্রী পারাপার ঠেকাতে ঘাটে থাকবে তাদের টহল দল।
কিন্তু পাটুরিয়া ঘাটে রোববার বিজিবির টহল তেমন চোখে পড়েনি। বেলা ২টার দিকে অল্প কিছু সময়ের জন্য বিজিবির কয়েকজন সদস্যকে দেখা গেছে। বাকি সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়।
তবে এমন কোনো নির্দেশনা পাননি বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ফেরি চালু করার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা এখনও পাইনি।
‘আর ঘাটে যাত্রীর চাপ একেবারে কম। ফলে পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান পারাপারের জন্য বিকেল পাঁচটার দিকে কুঞ্জলতা নামে একটি ফেরি ছাড়া হয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আরও ফেরি ছাড়া হবে।’
দৌলতদিয়া ঘাট শাখার উপ ব্যবস্থাপক ফিরোজ শেখ বলেন, ‘এখনও ও ইমারজেন্সি ফেরি চলতেছে। তবে সন্ধ্যার পর থেকে সবগুলো ফেরি চলবে।’
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ প্রতিরোধে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন বাস্তবায়নে কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকরে ১২ এপ্রিল ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ।
এতে বলা হয়, সব পরিবহন (সড়ক, নৌ, রেলপথ, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা ও জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
এরপর দুই দফা বাড়িয়ে লকডাউন ১৬ মে পর্যন্ত করা হয়।
গত ৫ মে নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগের মতোই আন্তজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে ৫ মের পর যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। উল্লেখ্য, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল আগের মতোই বন্ধ থাকবে।
এই প্রজ্ঞাপনে ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও থেমে নেই মানুষের ঈদযাত্রা। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার পাটুরিয়া ফেরিঘাটে প্রতিদিনই দেখা যায় হাজার হাজার যাত্রীর ভিড়। একই অবস্থা মহাসড়কগুলোতেও।