আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারির মধ্যেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সোমবার সকাল থেকে প্রকাশ্যে চলছে স্থানীয় রুটের বাস। যাত্রীরা বলছেন, অতিরিক্ত ভাড়া দিলেই সিট পাচ্ছেন তারা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, ধরা পড়লেই আটকে ফেলা হচ্ছে এসব বাস।
রবি ও সোমবার রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর ও টঙ্গী এলাকায় ঘুরে সড়ক পরিস্থিতির খবর রাখছিলেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক। রোববার সকাল থেকেই সেখানে যাত্রীদের চাপ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেলের দিকে প্রশাসনের ঢিলেঢালার তদারকির সুযোগে বাস চলাচল বেড়ে যায়। ইচ্ছেমতো ভাড়া হেঁকে যাত্রীদের তুলতে দেখা গেছে বাসে। মূলত ময়মনসিংহের যাত্রীই নিচ্ছে এসব বাস।
যারা বাসে উঠতে পারেননি তারা ট্রাক ও লরিতে চড়ে গন্তব্যের দিকে রওনা হন। এমনকি চলাচল বেড়েছে অটোরিকশারও। সোমবার সকাল থেকে বাস চলাচল আরও বেড়েছে। আর এসব বাসে ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।
রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া তুরাগ বাসে চড়েছেন আব্দুল মতিন মিয়া। তিনি জানান, এই পথের জন্য স্বাভাবিক সময়ের ভাড়া দুই শ থেকে সর্বোচ্চ তিন শ টাকা। কিন্তু এখন তাকে আট শ টাকা গুনতে হচ্ছে। কারও কারও কাছ থেকে এক হাজার টাকাও নেয়া হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।
তিনি বলেন, ‘আব্দুল্লাহপুরে চোখের সামনে প্রশাসনের নিরাপত্তা দেখেছি। গাড়ির ড্রাইভার ও হেলপারকে চোখের ইশারা দিয়ে ছেড়ে দিল। যে গাড়িতে ৪০ জন যাত্রী যাওয়ার কথা, সে গাড়িতে ৭০ থেকে ৮০ জন যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে।’
তুরাগ পরিবহনের হেলপার মো. সালাম বলেন, ‘কয়েক দিন গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হলো। ঈদকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন গাড়ি চালিয়ে কিছুটা লস পূরণ করব। এ ছাড়াও, সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ ও পরিবহন নেতাদের চাঁদাও দিতে হয়।’
লকডাউনের নির্দেশনা অমান্য করে প্রকাশ্যে বাস কীভাবে চলছে, তা জানতে চাওয়া হয় টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকার ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক (টিআই) সাহাদাৎ হোসেন।
তিনি বলেন, গত কয়েক দিন মানুষ বিভিন্ন পরিবহনে করে বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। তাই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রচুর চাপ। বিশেষ করে সকাল আর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কিছুটা হিমশিম খেতে হয়। গণপরিবহন ঠেকাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ট্রাফিকের একাধিক টিম রাস্তায় আছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটনের উপপুলিশ কমিশনার (ক্রাইম-দক্ষিণ) ইলতুৎ মিশ বলেন, ‘জেলাভিত্তিক যেসব পরিবহনে ভাড়া বেশি, অধিক যাত্রী অথবা পরিবহন থেকে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, জেলার বাইরে বাসের যাতায়াত ঠেকাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। এটি চলমান থাকবে।