নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
রোববার ফেসবুক ও টুইট বার্তায় করোনার নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ আসার কথা জানান তিনি।
টুইট বার্তায় তসলিমা নাসরিন বলেন, ‘এক বছরের বেশি সময় ধরে ঘরের বাইরে পা দিইনি। কাউকে ঘরে আসতেও দিইনি। ঘরের ভেতর আমার বিড়াল আর আমি ছিলাম। এরপরও আমি কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত! যদি জানতে পারতাম, আমি কীভাবে আক্রান্ত হলাম!’
ফেসবুক পোস্টে তসলিমা লেখেন, ‘আমি চিরকালই বড় দুর্ভাগা। এই যে গত বছরের মার্চ মাস থেকে একা আছি ঘরে, একখানা ইন্ডোর ক্যাট সঙ্গী, কোথাও এক পা বেরোলাম না, কাউকে ঘরে ঢুকতে দিলাম না, রান্না বান্না বাসন মাজা কাপড় কাচা ঝাড়ু মোছা সব একাই করলাম, কী লাভ হলো? কিছুই না। ঠিকই কোভিড হলো। গত এক বছরে শুধু একবার এক ঘণ্টার জন্য বাইরে বেরিয়েছিলাম, তাও দু'মাস আগে, টিকার প্রথম ডোজ নিতে। ওই ডোজটি কিছু অ্যান্টিবডি তৈরি করেছিল বলে হয়তো এ যাত্রা বেঁচে গেছি।’
i haven't stepped out of my home for more than a year. Didn't allow anyone to enter my home. i was alone with a cat. And then i caught covid-19. Wish i knew how i caught it. ☹️
— taslima nasreen (@taslimanasreen) May 9, 2021তিনি আরও লেখেন, ‘আমি চিরকালই বড় দুর্ভাগা। এক এক করে যদি লিখি কী কী ঘটেছে জীবনে যা ঘটার কথা ছিল না, তাহলে তালিকা এত দীর্ঘ হবে যে পড়ে কেউ কূল পাবে না। আপাতত কোভিড হওয়ার দুঃখটাই থাক। দুঃখ থাকাও হয়তো ঠিক নয়। কারণ ধীরে ধীরে আমি সুস্থ হয়ে উঠছি। কিন্তু হাজারো মানুষ যারা সুস্থ হতে পারেনি! যারা শ্বাস নিতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি শ্বাস নিতে! দুঃখগুলো বরং তাদের জন্য থাক। এখন এইটুকু অন্তত ভালো লাগছে, এটি আর স্টিগমা নয় আগের মতো। কারো কোভিড হলে সে লুকিয়ে রাখতো খবর, কারণ কোভিড হওয়াটা অনেকটা ছিল এইডস হওয়ার মতো। সমাজ ব্রাত্য করে দিত। এক বছরে এত মানুষকে ধরেছে এই কোভিড, এতে, ভালো, যে, স্টিগমাটা গেছে। কেউ আর বলতে দ্বিধা করেনা যে তার কোভিড হয়েছে।’
তবে ওই টুইট বার্তায় তসলিমা তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা নিয়ে কিছু জানাননি। ফলে বাংলাদেশি এই লেখিকা কবে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বা বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা কী তা জানা যায়নি।
তসলিমা বর্তমানে সুইডেনের পাসপোর্ট নিয়ে দিল্লিতে বসবাস করছেন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে আন্দোলনের মুখে ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।