ঢাকা থেকে প্রাইভেট কারে ধামরাইয়ের বারবাড়িয়া। সেখান থেকে বাসে মানিকগঞ্জের শিবালয়ের চেপড়া। চেপড়া থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় পাটুরিয়া ফেরিঘাট।
৪ বছরের মেয়ে ও স্বামীর সঙ্গে এভাবেই ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে এসেছেন জুলেখা আক্তার। লক্ষ্য, মাগুরায় পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা।
কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনে এ বছর বাড়ি ফিরতে চাওয়া মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। সব রকম নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তারা ছুটছেন নিজ নিজ বাড়ি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) শুক্রবার রাতে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল, শনিবার থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। রাতে শুধু পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারের জন্য ফেরি চলবে।
এরপর শনিবার বিজিবির পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান ঘোষণা দেন, ফেরিতে যাত্রী পারাপার ঠেকাতে ঘাটে থাকবে তাদের টহল দল।
কিন্তু পাটুরিয়া ঘাটে রোববার বিজিবির টহল তেমন চোখে পড়েনি। বেলা ২টার দিকে অল্প কিছু সময়ের জন্য বিজিবির কয়েকজন সদস্যকে দেখা গেছে। বাকি সময় শুধু পুলিশ ছিল।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এই ঘাট থেকে ছয়টি ফেরি যাত্রী পার করেছে।
জুলেখা আক্তার নিউজবাংলাকে জানান, ভোর থেকে এত ভোগান্তির পর ঘাটে এসে প্রায় তিন ঘণ্টা রোদের মধ্যে অপেক্ষা করেছেন। তবুও ফেরিতে উঠতে পারেননি। কখন পারবেন জানেন না।
ঘাটে পারের অপেক্ষায় থাকা ফরিদপুর সদরের রোকেয়া বেগম বলেন, ‘ভাবছিলাম ঘাটে মানুষ কম থাকবে। কিন্তু এসে দেখি মানুষের অভাব নাই। এই গরমের মধ্যে পাটুরিয়া ঘাটে অপেক্ষা করা খুব কষ্ট। নাই ভালো টয়লেট, নাই বসার জায়গা। কী যে খারাপ লাগতেসে।’
রাজবাড়ীর কুলসুম বেগম জানান, গাড়ির জন্য রাস্তায় কষ্ট আর ফেরির জন্য ঘাটে। প্রশাসনের উচিত নারী, শিশু ও বয়স্কদের কথা চিন্তা করে ফেরি চালু করা।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রমজান জানান, অ্যাম্বুলেন্স ও লাশবাহী গাড়ি পার করার জন্য ফেরি ছাড়া হচ্ছে। যাত্রীদের টয়লেট, বসার জায়গা ও বিশ্রামাগারের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ ভালো বলতে পারবে।