দূরপাল্লার বাস বন্ধ; বিকল্প উপায়ে ভোগান্তি সয়ে, অতিরিক্ত ভাড়া গুনে ঢাকা ছাড়ছেন হাজারও যাত্রী। উদ্দেশ্য, ঈদ করবেন বাড়ি গিয়ে, পরিবারের সঙ্গে।
যাত্রীদের চাপ ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে রোববার সকাল থেকেই। সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, শিমরাইল ও রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকায় মহাসড়কের পাশে গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন শ শ মানুষ।
কুমিল্লার যাত্রী শফিক উদ্দিন বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাস্তায় বের হয়েছি। বাস না থাকায় দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে মাইক্রোবাসে উঠলাম। এখানে যেমন ভাড়া বেশি, তেমনি হয়রানিও আছে। সাত সিটে ১৫ জন নিয়ে গাড়ি চলবে। ভাড়া জনপ্রতি ৮০০ টাকা। তারপর আবার রাস্তায় পুলিশ ধরলে সেখানে গন্তব্য শেষ।’
স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে হবিগঞ্জে যাচ্ছেন মো. আরিফুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে ভেঙে ভেঙে শিমরাইল পর্যন্ত এসেছি। এখানে রাতের (বাসের) টিকিট পাওয়া যাচ্ছে, তবে দিনে কোনো গাড়ি নেই। তাই মাইক্রোবাসে অতিরিক্ত ভাড়ায় উঠেছি। কিছুক্ষণ পরপর এদেরকেও দৌড়ানি দেয় পুলিশ। বাড়তি ভাড়ায় বাড়িতে যেতে এই ভোগান্তি হবে জেনেই সবাইকে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে।’
দিনে দূরপাল্লার বাস লকডাউনের নির্দেশনা মেনে বন্ধ থাকলেও রাতে কিছু বাস যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে বলে নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে।
অনেক যাত্রীকে চড়া দামে সেসব বাসের টিকিটও কাটতে দেখা গেছে। দীন ইসলাম নামের চট্টগ্রামগামী এক যাত্রী বলেন, ‘টিকিট কিনেছি ১২০০ টাকায়। যেতে হবে রাত ১টার পরে। কিছুই করার নেই, যেতে হবে। মুন্সিগঞ্জ থেকে চিটাগাং এসেছি, এখন রাত পর্যন্ত রাস্তায় থাকতে হবে।’
- আরও পড়ুন: বাড়তি ভাড়ায় ‘নিষিদ্ধ’ ঈদযাত্রা
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে মহাসড়কে তৎপর রয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। লুকিয়ে ঘরমুখী যাত্রীদের নিয়ে যেতে যেসব গাড়ি চেষ্টা করছে, তাদের রাস্তায় কোথাও না কোথাও পুলিশের সামনে পড়তেই হবে। সুতরাং সরকারি বিধিনিষেধ মেনে ঘরে থাকুন। রাস্তায় বের হয়ে ভোগান্তিতে পড়বেন না।’
এর আগে হাইওয়ে পুলিশের কাঁচপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেছিলেন, ‘দূরপাল্লার বাস যাতে মহাসড়ক দিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য হাইওয়ের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা। রাতে যেসব দূরপাল্লার বাস যাত্রী নেয় তাদের গাড়ি আটক করা হয়।’
জেলা ট্রাফিক পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ রয়েছে যাতে দূরপাল্লার বাস চলাচল করতে না পারে। পাশাপাশি মাইক্রোবাসে যাত্রী নেয়া হলে গাড়ির নামে মামলা দিতে বলা হয়েছে।’