বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনার নতুন ধরন আরও ক্ষতির, পরিবারের কথা ভাবুন

  •    
  • ৯ মে, ২০২১ ১২:৩৫

দেশবাসীর উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি দেশবাসীর জন্য বলছি, আপনারা একটু ধৈর্য ধরুন এবং নিজের ভালো চিন্তা করেন। সেই সঙ্গে পরিবারের ভালো চিন্তা করেন। করোনাভাইরাসের সময় আপনারা একটু মাস্ক পরে থাকবেন, সাবধানে থাকবেন। কারণ, আবার নতুন একটা ভাইরাস এসেছে। এটা আরও বেশি ক্ষতিকারক, যাকে ধরে সাথে সাথে মৃত্যু হয়। এ জন্য আপনি নিজে সুরক্ষিত থাকেন, অপরকে সুরক্ষা দেন।’

দেশে করোনাভাইরাসের ভারতের ডাবল মিউট্যান্ট ধরা পড়ার পরদিন দেশবাসীকে নিজের ও পরিবারের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হুড়োহুড়ি করে বাড়ি না গিয়ে সবাইকে নিজ নিজ জায়গায় ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রোববার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের অবশিষ্ট মূল অধিবাসী এবং ক্ষতিগ্রস্ত মোট ১ হাজার ৪৪০ জনের মধ্যে প্লট বরাদ্দ পত্র প্রদান অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি দেশবাসীর জন্য বলছি, আপনারা একটু ধৈর্য ধরুন এবং নিজের ভালো চিন্তা করেন। সেই সঙ্গে পরিবারের ভালো চিন্তা করেন। করোনাভাইরাসের সময় আপনারা একটু মাস্ক পরে থাকবেন, সাবধানে থাকবেন। কারণ, আবার নতুন একটা ভাইরাস এসেছে। এটা আরও বেশি ক্ষতিকারক, যাকে ধরে সাথে সাথে মৃত্যু হয়। এ জন্য আপনি নিজে সুরক্ষিত থাকেন, অপরকে সুরক্ষা দেন।

‘আমি জানি ঈদের সময় মানুষ পাগল হয়ে গ্রামে ছুটছে। কিন্তু এই যে আপনারা একসঙ্গে যাচ্ছেন। এই চলার পথে ফেরিতে হোক, গাড়িতে হোক যেখানেই হোক, কার যে করোনা ভাইরাস আছে আপনি জানেন না। কিন্তু আপনি সেটা বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন আপনার পরিবারের কাছে। মা, বাবা, দাদা, দাদি, ভাই, বোন আপনি কিন্তু তাকেও সংক্রমিত করছেন, তার জীবনটাও মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলে দেবেন।’

সব বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ফিরছে মানুষ। এতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা আরও বাড়ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা ঈদে কোথাও না গিয়ে নিজের ঘরে থাকলে কী ক্ষতিটা হয়। কাজেই আপনারা ছোটাছুটি না করে যে যেখানে আছেন, সে সেখানেই থাকেন, ওখানেই নিজের মতো করে ঈদটা উদযাপন করেন।

‘এখন রমজান মাস, আমরা রোজা রাখছি, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করেন যেন এই করোনার হাত থেকে আমাদের দেশ যেন মুক্তি পায়। দেশের মানুষ যেন মুক্তি পায়। আর যেন প্রাণহানি না হয়।’

করোনা সংক্রমণ রুখতে সরকার ১৬ মে পর্যন্ত দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করলেও নিষেধাজ্ঞা মানা হচ্ছে না। গত কয়েক দিন ধরে রাজধানী ছাড়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছেই। প্রতিটা ফেরির ঘাটে উপচে পড়া ভিড়। ঝুঁকি মাথায় নিয়েও প্রিয়জনের সাথে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়ছেন অনেক মানুষ। এতে সারা দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

প্রধানমন্ত্রী করোনার ভারতের অতি ছোঁয়াচে ধরনের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন এই অবস্থা শুধু বাংলাদেশে নয়। সারা বিশ্বেই কিন্তু করোনার জন্য কত মানুষ মারা যাচ্ছেন। আমাদের প্রতিবেশী দেশে প্রতিনিয়ত মানুষ মারা যাচ্ছে।

‘এই প্রতিবেশী দেশে যখন হয় তখন আমাদের দেশেও আসার এক সম্ভাবনা থাকে। সে জন্য আগে থেকেই আমাদের সুরক্ষিত থাকতে হবে। আমাদের সেভাবেই চলতে হবে যেন আপনারা সবাই করোনা ভাইরাস থেকে বেঁচে থাকতে পারেন।’

ভারতে এ মুহূর্তে করোনার তিনটি ভ্যারিয়েন্ট (B.1.617, B.1.617+S:V382L এবং B.1.618) নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। ‘B.1.618’ কে বলা হচ্ছে বেঙ্গল ভ্যারিয়েন্ট। ভারতের গবেষকরা দাবি করছেন, গত ৬০ দিনে সে দেশে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ১২ শতাংশের মাঝেই বেঙ্গল ভ্যারিয়েন্টে শনাক্ত হয়েছে।

এরই মধ্যে সীমানা পেরিয়ে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট প্রবেশ করেছে বাংলাদেশেও। এখন পর্যন্ত দেশে ছয়জনের দেহে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এরপর থেকেই কপালে ভাঁজ পড়েছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার ভারতের ভ্যারিয়েন্ট আরও বেশি সংক্রামক। একজন রোগী এক মাসে ৪০৬ জনকে আক্রান্ত করতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতের দ্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)।

প্রতিবেশী দেশের গবেষণা সংস্থাটির দেয়া তথ্য উদ্বেগজনক ভাবাচ্ছে বাংলাদেশকে। এই ভ্যারিয়েন্ট রোধে সীমান্ত বন্ধের পরও সংক্রমণ ঘটেছে, আর শনাক্ত দুইজন যাননি ভারতেও। অর্থাৎ অন্য কারও মাধ্যমে তাদের এলাকা সাতক্ষীরা ও খুলনায় এসেছে ভাইরাসটি।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সবচেয়ে বেশি শঙ্কিত মানুষের অসচেতনতায়। বারবার সাবধান করা হলেও স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি পাত্তা পাচ্ছে না। ঈদ কেনাকাটা আর বাড়ি ফিরতে মানুষ যে বেপরোয়া মনোভাব দেখাচ্ছে, সেটি করোনার সংক্রমণ ঘটাতে পারে বলেও মনে করছেন তারা।

এ বিভাগের আরো খবর