ফরিদপুরের নগরকান্দায় ফয়েজ মাতুব্বর নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। অভিযোগ, বড় ভাইয়ের গুলিতে আহত হন তিনি।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের উত্তরকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত ফয়েজকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, উত্তরকান্দি গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য নুরুল হক মাতুব্বরের চার ছেলে। তাদের মধ্যে বড় ছেলে ফারুক মাতুব্বর, মেজো ছেলে ফরহাদ মাতুব্বর, সেজো ছেলে ফয়েজ মাতুব্বর ও ছোট ছেলে মাহমুদুল হক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিকেলে মাটি কাটা নিয়ে বড় ভাই ফারুক মাতুব্বরের সঙ্গে মেজো ভাই ফরহাদের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় সেজো ভাই ফয়েজ ও পরিবারের সদস্যরা বিবাদ মেটাতে এগিয়ে যান। একপর্যায়ে ফরহাদ তার কাছে থাকা অবৈধ পিস্তল দিয়ে ফারুকের উদ্দেশে গুলি ছোড়েন। তবে ফারুকের গায়ে না লেগে গুলি লাগে ফয়েজের হাতের কনুইতে।
তারা আরও জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় ফয়েজকে পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সেখান থেকে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
নুরুল হক মাতুব্বর বলেন, ‘মেজো ছেলে ফরহাদের অত্যাচারে আমি ও আমার স্ত্রী বাড়িতে থাকি না। ভাঙ্গায় বাসা ভাড়া করে থাকি। আমাদের সঙ্গে সেজো ছেলে ফয়েজও থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেজো ছেলে মাদক কারবারি ও সেইসঙ্গে মাদকাসক্ত। অনেক চেষ্টা করেছি তাকে ফেরাতে, কিন্তু পারিনি। তাই বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়ে ভাঙ্গায় ভাড়া বাসায় থাকি।’
ফারুক জানান, ভাই ও বাবা-মা ভাঙ্গায় থাকলেও তিনি বাড়িতেই থাকেন। তবে একাধিকবার অপমান করায় তিনি ফরহাদের সঙ্গে কথা বলেন না।
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার জুমার নামাজের পর বাড়ি ফিরি। সেজো ভাই ফয়েজও ভাঙ্গা থেকে বাড়িতে আসে। ওই সময় ফরহাদ জমির মাটি কাটা নিয়ে আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করে। আমি প্রতিবাদ করলেই আমার ওপর তেড়ে আসে।
‘এক পর্যায়ে কাছে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলি করলে তা আমার গায়ে না লেগে ফয়েজের হাতের কনুইতে লাগে। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। সে এখন সুস্থ আছে।’
ভয়ে বাড়িতে যেতে পারছেন না জানিয়ে এ সময় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ফারুক।
ফারুকের স্ত্রী লাবনী আক্তার বলেন, ‘বাড়িতে সব সময় মুখ বুজে থাকি। দেবর, তাই কিছু বলতে পারি না। কিন্তু আজকে ফরহাদ ওর ভাইয়ের উপর গুলি চালিয়েছে। গুলিটা যদি বুকে লাগত তাহলে তো আমি আমার স্বামীকে হারাতাম।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ফরহাদ মাদক ব্যবসায়ী। নিজেও সব সময় নেশাগ্রস্ত থাকেন। সবসময় অবৈধ অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করেন। এ কারণে এলাকার সবাই তাকে ভয় করে।
ঘটনার পর থেকেই পলাতক ফরহাদ। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম রেজা বিপ্লব জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ফরহাদের বাড়ি থেকে দেশীয় অস্ত্র ঢাল-সরকি জব্দ করা হয়েছে। ফরহাদকে আটক করতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।