বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শহরে বাস নামানোর প্রস্তুতি, স্বস্তির সঙ্গে আছে হতাশাও

  •    
  • ৫ মে, ২০২১ ২০:৪৭

বৃহস্পতিবার থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শহরের ভেতরে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। ঈদের ঠিক অল্প কিছুদিন আগে গণপরিবহন চালু করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চালক, হেলপার ও অন্য শ্রমিকরা। সব কিছু আগে খুলে দিলেও গণপরিবহন দেরিতে চালু করায় তারা হতাশ।

রাস্তার পাশে খোলা মাঠ, দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি বাস। অপেক্ষা নতুন সকালের। প্রত্যেকটি বাসের ভিতরে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। কেউ কেউ তেল, মবিল ও গাড়ির ইঞ্জিন ঠিক আছে কি না পরীক্ষা করে দেখছেন। তবে ঈদের ঠিক অল্প কিছুদিন আগে গণপরিবহন চালু করায় হতাশাও প্রকাশ করেছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।

বুধবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর বাসস্ট্যান্ড ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়। এই স্ট্যান্ড থেকে পরিস্থান, প্রজাপতি ও রজনীগন্ধা নামে তিন পরিবহনের বাস রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে।

বৃহস্পতিবার থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শহরের ভেতরে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে আন্তজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। গত ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়। তখন থেকে সারা দেশে গণপরিবহন বন্ধ করা হয়।

পরিস্থান বাসের চালক মো. হাবীব তার আসনে বসে ইঞ্জিন পরীক্ষা (চেক) করছিলেন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বাস চালু নিয়ে প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি জানান, সরকারের সব নির্দেশনা মেনেই রাস্তায় বাস নিয়ে নামতে তারা প্রস্তুত।

তিনি বলেন, ‘সকাল থেইকা আমরা বাস চালানো শুরু করবো। সরকার যেসব নিয়ম মানতে কইছে, আমরা সব মাইনা রাস্তায় নামমু।’

গণপরিবহন চালুর আগ মুহূর্তে বাসের তেল, মবিল ও ইঞ্জিন ঠিক আছে কি না পরীক্ষা করে দেখছেন শ্রমিকরা। ছবি: নিউজবাংলা

স্বাস্থ্যবিধি মানতে নির্দেশনা থাকলেও অনেক সময় গণপরিবহনে তা অগ্রাহ্য হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। কেন এমন হয় এ প্রশ্নে বাসচালক মো. হাবীব বলেন, ‘দেখেন আমরা তো চেষ্টা করি সব মানার। অনেক সময় পরিস্থিতি থাকে না, ১০ জনের জায়গায় ১৫ জন বাসে উঠে যায়। যাত্রীরাও শুনতে চায় না, আমাদের তখন কী করার থাকে?।’

হতাশ চালক, হেলপার ও অন্য কর্মচারীরা

ঈদের ঠিক অল্প কিছুদিন আগে গণপরিবহন চালু করায় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন চালক, হেলপার ও অন্য শ্রমিকরা। সব কিছু আগে খুলে দিলেও গণপরিবহন দেরিতে চালু করায় তারা হতাশ।

প্রজাপতি পরিবহনের বাসের হেলপার ইলিয়াস আলি বলেন, ‘এই যে বাড়ি থেইকা আইসি, নিজের পকেট থেইকা ভাড়া দিয়া আইসি। এত দিন বাস বন্ধ, আমাগোরে কেউ দুই টাকা দিয়াও সাহায্য করে নাই। এমনকি আমাগো মালিকও না। আমাগো বেশির ভাগই পেট চালানোর লাইগা এই কয়দিন রিকশা চালাইছি।’

তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার পরিবার আছে, বাচ্চাকাচ্চা আছে। ওরা তো দেখছে এত দিন বাস বন্ধ আছিলো, ঈদে টাকা নাই বইলা কিছু না কিন্না দিয়া বুঝাইতে পারতাম। অহন তো অন্য সব বন্ধ, যাত্রী পামু কম। নিজের হারাদিনের খরচ আইতেই তো কষ্ট হয়া যাইবো। বাচ্চাকাচ্চারে কি কয়া বুঝামু, আপনেই কন।’

হতাশা আর ক্ষোভ দেখা গেছে বাসমালিকদের মধ্যেও।

প্রজাপতি পরিবহনের আওতায় মো. আজিজের দুইটা বাস চলে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের এমডি জানিয়েছেন আগামীকাল থেকে বাস চলবে। ঢাকা সিটিতে আমাদের মতো কেউ স্বাস্থবিধি মেনে চলে না। আমাদের গাড়িতে হ্যাক্সোসল-স্প্রে থাকে। দুই সিটে একজন যাত্রী চলে।’

হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ঢাকা সিটিতে যেমনে গাড়ি চলে কোনো স্বাস্থবিধি মানে নাই। এক সিএনজিতে পাঁচজন যাত্রী নিয়ে চলে। একটা মাইক্রোবাসে ১২ থেকে ১৩ জন নিয়ে চলে, একটা প্রাইভেটকারে ৪-৫ জন ওঠে। এরা কতটুক স্বাস্থবিধি মেনে চলতেছে?

বাসমালিক মো. আজিজ আরও বলেন, ‘কেবল বাংলাদেশে পরিবহন আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লকডাউন। তাছাড়া গার্মেন্টস-ফ্যাক্টরি সবই তো খোলা। বাসের মতো অন্য কোনো পরিবহন এত নিয়ম মেনে চলে না। তার পরেও হেলপাররা এলোমেলোভাবে কখনও দুই-একজন যাত্রী বেশি নিলেই অনেক জায়গায় বিপাকে পড়েন। তখন হাজার টাকা জরিমানা দেই আমরা।’

এ বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আমরা সবাইকে চিঠি দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়েছি। মাস্ক ছাড়া যেন কোনো যাত্রী বাসে উঠতে না পারে এবং পরিবহনের কর্মীরাও যেন মাস্ক পরে সে বিষয়টি সবাইকে জানিয়েছি।’

যাত্রী ও ভাড়ার বিষয় নিয়ে নিউজবাংলাকে পরিবহন মালিক সমিতির এই নেতা আরও বলেন, ‘আগের নিয়মেই দুই সিটে একজন যাত্রী নেয়া হবে, এর বেশি যাত্রী নেয়া যাবে না। আর ভাড়াও আগের নিয়মেই নেয়া হবে।’

সরকার নিয়ম বেঁধে দিলেও অনেকে সেটা মানেন না। এ কারণে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না এমন প্রশ্নে এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘এবার আর এমন হবে না। এখন তো অফিস নাই। অফিস চলাকালীন এমনটা হতো। এবার নিয়ম মেনেই পরিবহন চলবে আশা করি।’

কেউ নিয়ম না মানলে কী করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থবিধি ও সরকারের বেঁধে দেয়া নিয়ম যে না মানবে বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেট তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।’

এ বিভাগের আরো খবর