বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের অভিযানের সময় অন্ধকার শপিংমল

  •    
  • ৪ মে, ২০২১ ২০:১৭

আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সমস্যা না থাকলেও অভিযানের সময় বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স ছিল বিদ্যুৎহীন। ভ্যাপসা গরম আর ভীড়ের মধ্যে পরিস্থিতি ছিল অসহনীয়। ৭৭ মিনিটের অভিযান পুরোটাই পরিচালনা করা হয় গণমাধ্যমের ক্যামেরা আর মোবাইলের আলোতে।

ঈদের কেনাকাটায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের জন্য বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্স শপিংমলে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে এই অভিযান অনেকটাই ছিল দুষ্কর।

আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সমস্যা না থাকলেও অভিযানের সময় বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স ছিল বিদ্যুৎহীন। ভ্যাপসা গরম আর ভীড়ের মধ্যে পরিস্থিতি ছিল অসহনীয়। ৭৭ মিনিটের অভিযান পুরোটাই পরিচালনা করা হয় গণমাধ্যমের ক্যামেরা আর মোবাইলের আলোতে।

মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে শুরু হওয়া অভিযানে নেতৃত্ব দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ রফিকুল হক। তার দল ভবনে ঢুকেই দেখেন বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বন্ধ ছিল ২৩২৫টি দোকান ও আটতলা এই মার্কেটের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা, ইলেক্ট্রিক সিঁড়িসহ দোকানের আলোকসজ্জা। এসব সচল রাখতে পুরোদমে চালু করা হয়নি জেনারেটরগুলোও।

অনেকেই অভিযোগ করেন, অভিযানে বিঘ্ন ঘটাতেই এমন করা হয়েছে। তবে থেমে থাকেননি ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানে দোকানি ও শপিং করতে আসাদের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা করা হয়েছে। করা হয়েছে বিভিন্ন অঙ্কের জরিমানা।

শপিং কমপ্লেক্সের প্রবেশ মুখেই মাস্ক না পরার কারণে একজন বিক্রয়কর্মীকে ২০০ টাকা জরিমানা করেন ম্যাজিস্ট্রেট। বিপত্তি ঘটে ভেতরে ঢুকে। মার্কেটের কোনো দোকানে আলো ছিল না। গরমের দোহাই দিয়ে অনেকেই মাস্ক পরা থেকে বিরত থাকেন। কারও কারও মাস্ক দেখা যায় থুতনিতে।

ভেতরে ঢুকেই জরিমানা করা হয় একজন পত্রিকা বিক্রয় কর্মীকে। ১০০ টাকা জরিমানা করা হলেও পড়ে তা কমিয়ে ৫০ টাকায় আনা হয়।

নিচতলা দুটি ব্লক ঘুরে লেভেল-২ এ যান ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি যে ব্লকেই যান সেখানেই বিদ্যুৎ থাকে না। দোকানিরা জানান, সকাল থেকেই তারা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছেন। এ জন্যই এই দশা। যাকেই জরিমানা করা হয়, তিনিই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

অভিযান চলার সময় ম্যাজিস্ট্রেট শেখ রফিকুল হককে নিউজবাংলা প্রশ্ন রাখে, কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা তো দেখতে পারছেন। এটা কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারবে কেন বিদ্যুৎ নেই। তবে আমি আমার অভিযান পরিচালনা করে যাব।’

সাইফুল ইসলাম নামে এক দোকানি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই গরমে কারেন্ট নেই। আমি দোকানেই ছিলাম। একটু মাস্কটা নামাইছি তাই আমাকে ধরে এনে মামলা দিয়ে দিয়েছে।’

মোবাইল বিক্রির দোকানের এক বিক্রয়কর্মীকে মাস্ক না পরার কারণে জরিমানা করা হলে তিনি বলেন, ‘এভাবে তো হয় না। আপনারা নিজেরাই ৩০ জন লোক নিয়ে এসেছেন। আপনাদের মধ্যে কারো সামাজিক দূরত্ব মানার বালায় নেই। আর আমি একটু মাস্ক নিচে করেছি তাই আমাকে জরিমানা করা হলো।’

অনেকেই অভিযোগ করছেন বিদ্যুৎ না থাকার কারণে গরমে মাস্ক অল্পের জন্য খুলেছিলেন তারা। আর এর জন্য জরিমানা গুনতে হয়েছে।

বিদ্যুৎ না থাকার কারণে অনেক দোকানিকে মোবাইলের আলো ব্যবহার করে ক্রেতাকে পণ্য দেখাতে হয়। তবে মার্কেটের কোথাও সাস্থ্যবিধি মানার বালায় ছিল না। প্রতিটি দোকানেই ছিল ভিড়। আলো না থাকায় বাইরে থেকে পরিস্থিতি বোঝার উপায় ছিল না। লেভেল-৩ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করতে পারেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

দুপুর দেড়টার দিকে অভিযান শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানান, অভিযানে মোট ১৭টি মামলা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে মোট সাড়ে ৫ হাজার টাকা। জরিমানার মধ্যে সর্বোচ্চ অঙ্ক, ১০০০ টাকা, সর্বনিম্ন ৫০ টাকা।

তিনি বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আমরা আজ সেজন্যই অভিযান পরিচালনা করেছি। যারা স্বাস্থ্যবিধি মানেনি তাদের ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আইনের ২৬৯ ধারায় জরিমানা করা হয়েছে।’

অভিযানের সময় শপিং কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ না থাকার কারণ জানার জন্য যোগাযোগ করা হয় বসুন্ধরা সিটির ওয়েবসাইটে দেয়া অফিসের নম্বরে। সেখানে সোলায়মান নামে এক কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি বলেন, ‘গতরাত থেকেই বিদ্যুতের সমস্যা হয়েছে। মূলত গত রাতের ঝড় বৃষ্টির জন্য এই সমস্যা। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য।’

ঈদ উপলক্ষে লকডাউন শিথিল করে শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেয়া হলেও কেনাকাটায় যাতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে সরকারের।

এ ব্যাপারে সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। যদি না পরে তাহলে আমরা এখন স্ট্রং অ্যাকশনে যাব।’

এর অংশ হিসেবে মঙ্গরবার বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেকের পাশাপাশি অভিযান পরিচালিত হয় নিউ মার্কেটেও। সেখানেও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় অনেকের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানা করা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর