স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে নিউমার্কেটে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে থাকা টিমটি যে পাশে যায়, সেখানেই সবাই মাস্ক পরে দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করছেন। ম্যাজিস্ট্রেট চলে যাওয়ার পরই দৃশ্যটা পাল্টে যায়।
‘গরমে বুক ভরে দম নেয়ার অজুহাতে’ কারও মাস্ক মুখ থেকে থুতনি বা গলায় নেমে আসে। কারোরটা একেবারে পকেটে। আর তিন ফুট দূরে থাকা অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বাধ্যবাধকতা কোথাও দেখা যায় না।
অভিযানে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মার্কেট কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনাভাইরাস মহামারি থেকে নিজেকে এবং অন্যকে রক্ষা করতে প্রত্যেককেই সচেতন হতে হবে। ভাইরাসে দেশে সাড়ে ৭ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হওয়া ও সাড়ে ১১ হাজারের বেশি মৃত্যুর পরও কিছু মানুষ করোনা থেকে রক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মানতে অবহেলা করছেন।
ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মার্কেট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে, যারা মাস্ক ছাড়া আসছেন, তাদের প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তার সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যরা জনগণকে সচেতন করছেন এবং জরিমানা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে নিউমার্কেটে অভিযান শুরু করেন ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডা. সঞ্জীব দাস। বেলা প্রায় ২টা পর্যন্ত চলা অভিযানে ১৫ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। দোকানি ও শপিং করতে আসাদের সর্বনিম্ন ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়েছে।
ক্রেতার মুখে মাস্ক নেই, জরিমানা গুনলেন দোকানমালিক
নিউমার্কেটের ৪ নম্বর গেটসংলগ্ন অমিত এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি কাপড়ের দোকানে ক্রেতা মাস্ক না পরায় মালিককে ১ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ ছাড়া আরও ১৪ জন ক্রেতা-বিক্রেতাকে জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযান প্রসঙ্গে ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীব দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য উৎসাহিত করা। আমাদের ক্লিয়ার মেসেজ ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুই চলবে, তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
‘এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে আমাদের যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ অভিযান পরিচালনা করব। জনগণ সচেতন না হলে কিন্তু আমরা অভিযান পরিচালনা করে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না। সেই জন্য যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না তাদের অর্থদণ্ড দিয়ে আমরা মেসেজ দিতে চাচ্ছি যে, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাইরে আসলে আপনাদের জরিমানার সম্মুখীনও হতে হবে।’
ক্রেতাদের অসচেতনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম শাহিনও। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমরা মার্কেট চালুর পর থেকে প্রশাসনের নজরদারির কথা বলে আসছিলাম। আজ থেকে মনিটরিং শুরু হয়েছে। ক্রেতারা অনেক উদাসীন। তাদের নিজেদেরই সচেতন হতে হবে। আমরা প্রতিদিন মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য বলছি। এখন অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতা মাস্ক পরছেন। কিন্তু ভিড় কমানো যাচ্ছে না।’