বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মামুনুলের ধর্ষণ মামলা: আদালত প্রতিবেদন চায় ৩০ মের মধ্যে

  •    
  • ১ মে, ২০২১ ২০:১৯

শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় এসে নিজে মামলাটি করেন গত ৩ এপ্রিল এই উপজেলার রয়্যাল রিসোর্টে আসা সঙ্গিনী। ওই দিন স্থানীয়রা অবরুদ্ধ করার পর মামুনুল হক তার সঙ্গিনীকে স্ত্রী দাবি করেন। বলেন, তারা দুই বছর আগেই বিয়ে করেছেন।

হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্মমহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তার রিসোর্ট সঙ্গিনীর করা ধর্ষণের মামলা তদন্ত করে ৩০ মের মধ্যে প্রতিবেদন চেয়েছে আদালত।

বাদীর মেডিক্যাল রিপোর্ট ও অন্যান্য আলামতও দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মামলা করার পরদিন শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সাকিল আহম্মদ এই আদেশ দেন।

আদালতে পুলিশ ধর্ষণের মামলার নথি নিয়ে হাজির হয়। এরপর হয় সংক্ষিপ্ত শুনানি।

নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘মামলায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ রয়েছে তা তদন্ত করতে বলা হয়েছে।’

শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় এসে নিজে মামলাটি করেন গত ৩ এপ্রিল এই উপজেলার রয়্যাল রিসোর্টে আসা সঙ্গিনী।

ওই দিন স্থানীয়দের দ্বারা অবরুদ্ধ হওয়ার পর মামুনুল হক তার সঙ্গিনীকে স্ত্রী দাবি করেন। বলেন, তারা দুই বছর আগেই বিয়ে করেছেন।

তবে মামুনুল সঙ্গিনীর যে নাম, বাবার নাম ও ঠিকানা বলেন-তার সবই ভুয়া। তিনি প্রকৃতপক্ষে তার চার সন্তানের জননী স্ত্রী আমিনা তাইয়্যেবার নাম, তার বাবা জাহিদুল ইসলামের কথা বলেছিলেন।

পরে রাতে মামুনুল ফোন করে আমিনা তাইয়্যেবাকে বলেন, তার সঙ্গিনী জনৈক শহীদুল ইসলামের স্ত্রী, তিনি ঘটনার চাপে পড়ে তাকে স্ত্রী বলতে বাধ্য হয়েছেন।

পরে নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ১ ধারায় করা মামলায় বাদী বলেন, ‘সে (মামুনুল) আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। গত দুই বছর যাবৎ আমাকে বিভিন্ন সময় ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরির নাম করে নিয়ে গিয়ে তার পরিচিত বিভিন্ন হোটেল ও রিসোর্টে রাত্রিযাপন ও বিবাহের আশ্বাস দিয়ে তার যৌন লালসা চরিতার্থ করে। একপর্যায়ে আমি বিবাহের কথা বললে সে আমাকে বিবাহ করব, করছি বলে নানা অজুহাতে কালক্ষেপণ করতে থাকে।’

‘আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে উনি (মামুনুল) আমার সঙ্গে অন্যায় করেছেন, প্রতারণা করেছেন। আমি রাষ্ট্রের কাছে বিচার চাই। আমার এইটুকুই বলার, আর কিছুই বলার নেই।’

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মামুনুল হক সরলতার সুযোগ নিয়ে আমাকে ধর্ষণ করেছে। বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে অনেক জায়গায় নিয়ে গেছে, সেখানে রাত্রিযাপন করেছে। বিয়ের ব্যাপারে কথা বলার অজুহাতে রয়্যাল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। সে আমার সঙ্গে অন্যায় করেছে, প্রতারণা করেছে। আমি রাষ্ট্রের কাছে তার বিচার চাই।’

মামলা করার পরেই বাদীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয় নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় গিয়ে নিজে মামলাটি করেন মামুনুলের সঙ্গিনী

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ‘ইতোমধ্যে মামলাটি তদন্ত শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। মামলার এজাহারে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে। আদালতে যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’

এই মামলার বিষয়ে মামুনুল হকের পরিবার, তার দল খেলাফত মজলিস ও সংগঠন হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি এক দিন পেরিয়ে গেলেও।

কী সাজা হতে পারে মামুনুলের

যে ধারায় মামলাটি করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে ‘যদি কোনো পুরুষ বিবাহবন্ধন ব্যতীত ১৬ বছরের অধিক বয়সী কোনো নারীর সহিত তাহার সম্মতি ব্যতিরেকে বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলকভাবে তাহার সম্মতি আদায় করিয়া অথবা ১৬ বছরের কম বয়সী কোনো নারীর সহিত সম্মতিসহ বা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সঙ্গম করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত নারীকে ধর্ষণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।’

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর ৯(১) ধারায় বলা ছিল, ‘যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।’

তবে ২০২০ সালের সংশোধিত আইনের ৯(১) ধারায় সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডের শাস্তিও যুক্ত হয়েছে। এখনকার আইনটির ৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।’

আপিল বিভাগের সাবেক বিচারক বিচারপতি নিজামুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইন সংশোধনের পর আদালতে অভিযোগ প্রমাণ হলে সে অনুযায়ীই আসামির সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে।’

এ বিভাগের আরো খবর