সহিংসতার মামলায় হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহকারি মহাসচিব মাওলানা জাফর আহমদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি হেফাজতের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী হত্যা মামলারও আসামি।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে শনিবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারি থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মইনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘হেফাজত নেতা জাফর আহমদ হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি। এর প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন জানান, ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় জাফর আহমদের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়। সেই নাশকতার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সহিংসতার মামলা ছাড়াও হেফাজতের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী হত্যা মামলার আসামিও জাফর।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় হাঙ্গামার মধ্যে হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু হয়। শফীকে হত্যা করা হয়েছে বলে ডিসেম্বর মাসে মামলা করেন তার শ্যালক মাওলানা মাইনউদ্দিন।
গত ১২ এপ্রিল মামলাটির তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা পিবিআই। এতে শফীকে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই মামলায় হেফাজতে ইসলামের বর্তমান আমির জুনায়েদ বাবুনগরীসহ মোট ৪৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ মার্চ রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে হেফাজতের কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষের জেরে সহিংসতা হয় চট্টগ্রামের হাটহাজারী, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জসহ আরও কয়েক জেলায়।
হেফাজতের তাণ্ডবের পর হাটহাজারী থানা প্রাঙ্গণ। ফাইল ছবি
হাটহাজারীতে থানা, এসিল্যান্ডসহ সরকারি অফিস, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। একই রকমের তাণ্ডব চালানো হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও। এসব ঘটনায় অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়, আগত হয় আরও অনেকে।
এর পর থেকেই সরকারের সঙ্গে হেফাজতের দূরত্ব বাড়তে থাকে। বিভিন্ন মামলায় গত কয়েক দিনে গ্রেপ্তার হয় ধর্মভিত্তিক সংগঠনটির শীর্ষ পর্যায়ের অন্তত ৩০ জন নেতা।
এর শুরুটা হয় হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মামুনুল হককে দিয়ে। গত ১৮ এপ্রিল দুপুরে ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
চলমান গ্রেপ্তার অভিযানের মধ্যে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার আশায় ১৯ ও ২৫ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন হেফাজত নেতারা। অবশ্য, বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়ে নিয়ে কিছু জানা যায়নি।
দুই দফার বৈঠকের পরও হেফাজত নেতাদের গ্রেপ্তার থামছে না। গ্রেপ্তার নেতাদের ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর ও গত মাসের তাণ্ডবের বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।