বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গণপরিবহন চালুর দাবিতে রোববার বিক্ষোভ

  •    
  • ৩০ এপ্রিল, ২০২১ ১৩:৩৭

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন জানিয়েছে, গণপরিবহন চালুর দাবি বাস্তবায়নে রোববার বিক্ষোভে নামবে তারা। পাশাপাশি মঙ্গলবার সারা দেশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করবেন সড়ক পরিবহন খাতে জড়িত শ্রমিকেরা।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে গণপরিবহন চালুর দাবিতে আগামী রোববার সারা দেশে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এমন ঘোষণা দেয় সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের সংগঠনটি। এতে জানানো হয়, গণপরিবহন চালুর দাবি বাস্তবায়নে রোববার বিক্ষোভ মিছিলের পাশাপাশি মঙ্গলবার সারা দেশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে গণপরিবহন ও সব ধরনের পণ্য পরিবহন চলাচলের ব্যবস্থা করাসহ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান ও খাদ্যসহায়তা প্রদান করা এবং সারা দেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকায় ওএমএসের চাল বিক্রির ব্যবস্থা করা।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী জানান, বাংলাদেশে সড়ক পথে প্রায় ৭৫ শতাংশ যাত্রী চলাচল এবং ৬৫ শতাংশ পণ্য পরিবহন করা হয়। এ কাজে প্রতিদিন ৫০ লাখ পরিবহন শ্রমিক কাজ করে থাকেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা লকডাউনের বিরোধিতা করছি না। কথা ছিল লকডাউনের সময় মানুষের চলাচল, শ্রমঘন শিল্প, হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কোর্টকাচারি ইত্যাদি সব বন্ধ থাকবে। সেই হিসেবে গণপরিবহন বন্ধ থাকলে পরিবহন শ্রমিকের কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, লকডাউন শিথিল করায় বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান, শপিং মল, বাজার, অফিস-আদালত, গার্মেন্টস, শপিং মল, কাঁচাবাজার, অফিস-আদালত ইত্যাদি চলছে।’

এ বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে জানান, রমজান মাস প্রায় শেষ দিকে, সামনে ঈদুল ফিতর। সড়ক পরিবহনে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক কর্মহীন থাকায় তাদের জীবিকা নির্বাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন।

গণপরিবহন চালুর দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। ছবি: নিউজবাংলা

সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের এই নেতা বলেন, সড়ক পরিবহন শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসলে তার দায়দায়িত্ব বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন বহন করবে না। অন্যদিকে, গণপরিবহন বিশেষ করে বাস-মিনিবাস ইত্যাদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করার সুযোগ করে দিলে ছোট ছোট যানবাহনে যাত্রীদের দূরদূরান্তে কষ্ট করে, স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে চলাচল করতে হবে না। এতে অর্থনৈতিক মুক্তি মিলবে এই সেক্টরের শ্রমিকদের। অবসান হবে অসন্তোষের।

করোনাকালে যেহেতু পরিবহন শ্রমিকদের সব সময় গণমানুষের সংস্পর্শে থাকতে হয়। তাই পরিবহন শ্রমিকরা যেমন সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকেন, তেমনি যাত্রীরাও ঝুঁকিতে থাকেন। সেই বিবেচনায় গণপরিবহন বন্ধ রাখা যুক্তিসংগত বলে মনে করেন ওসমান আলী।

‘তবে পরিবহন শ্রমিকদের জীবিকার নিশ্চয়তা বিধানের কথাও ভাবা দরকার। জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনে জীবিকা প্রয়োজন। তাই মানুষ জীবন বাঁচানোর জন্য জীবিকার অনুসন্ধানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশ-বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। শুরুতে গণপরিবহন বন্ধ রাখা হলেও পরে মহানগরগুলোতে চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়।

শেষ দিকে এসে সময় বেঁধে দিয়ে দোকানপাট ও শপিং মল খোলা রাখারও সিদ্ধান্ত আসে। পরে সরকার আরও দুই দিনের জন্য বিধিনিষেধের সময় বাড়ায়।

কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সংক্রমণ প্রতিরোধে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল কঠোর বিধিনিষেধসহ লকডাউন আরোপ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সারা দেশে সর্বাত্মক লকডাউন আরও এক সপ্তাহ অর্থাৎ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ায় সরকার।

কঠোর লকডাউন নিশ্চিতে আরোপ করা হয় ১৩ দফা বিধিনিষেধ। এর মধ্যে শপিং মল, দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থাকলেও মানুষের জীবন-জীবিকা বিবেচনায় লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

চলমান লকডাউনের মধ্যে ২৫ এপ্রিল স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট ও শপিং মল আরও বেশি সময় খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের নেতা ওসমান আলী জানান, অনাহারে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকার কথা থাকলেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, যাত্রীসাধারণ অটোরিকশা, কার, মাইক্রোবাস, মিনি ট্রাক, মটরসাইকেলে তিনজন যাত্রী এবং রিকশাভ্যান প্রভৃতি যানবাহনে এমনকি নদীপথে স্পিড বোট, ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ধারণক্ষমতা তিন-চার গুণ বেশি যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করছে। ওইসব যানবাহন যেভাবে যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে তা মোটেই নিরাপদ নয়।

‘এই সকল যানবাহনে যাত্রী দূর-দূরান্তে চলাচলের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে, অন্যদিকে তাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় এবং নানা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বাস ও ট্রাক ছাড়া সড়ক পথে সকল যানবাহন চলছে। এর ফলে সড়ক পরিবহনের অর্ধাহারে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাদিকুর, পরিবহন নেতা রহমান হিরু, শহিদুল্লাহ ছদু, মফিজুল হক, হুমায়ুন কবির খান,আব্বাস উদ্দিন খানসহ আরও অনেকে।

এ বিভাগের আরো খবর