কওমিদের শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি জানিয়েছে ইসলামী ফ্রন্ট।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
আলিয়া মাদ্রাসা ও কওমি মাদ্রাসার জন্য আলাদা শিক্ষা নীতিমালা ভবিষ্যতে সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ফ্রন্টের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব স উ ম আবদুস সামাদ বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসা তাদের নিজস্ব বোর্ডের আওতায় পরিচালিত। তাদের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। এতে কওমি শিক্ষার্থীদের মাঝে বেপরোয়াভাব দেখা যায়। এই উগ্রতার লাগাম টেনে ধরতে হবে। এ জন্য আলিয়া-কওমি শিক্ষা ব্যবস্থাকে একই সিলেবাসভুক্ত করতে হবে।’
হেফাজতে ইসলামকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির জন্য হেফাজত যতটুকু দায়ী, তেমনি সরকারও দায় এড়াতে পারে না। এ সব জঙ্গিবাদীর প্রতি কঠোর না হওয়ায় তারা মাথাচাড়া দেয়ার সাহস পেয়েছে। কওমিদের দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমর্যাদা দেয়া দেশ ও জাতির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ’৭১-্এর ঘাতক-দালাল রাজাকারদের যেভাবে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে, তেমন কওমিদের উদ্যোগে গঠিত স্বাধীনতাবিরোধী আরেক অপশক্তি মুজাহিদ বাহিনীরও বিচার হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামের হাটহাজারী, পটিয়া, ঢাকার বড় ও ছোট কাটারা, লালবাগসহ বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসায় মুজাহিদ বাহিনীর ক্যাম্প ছিল। এ সব ক্যাম্পে যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিন বলেন, ‘নৈতিক স্খলন ও জঙ্গিবাদে যুক্ত হেফাজতকে অবশ্যই নিষিদ্ধ করতে হবে। নতুন কমিটি গঠন করেছে বলে এর অতীতের কর্মকাণ্ড ভুললে চলবে না। সংগঠনটি বাবুনগরী ও শফিপন্থিতে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে। যে পন্থিই হোক না কেন, তাদের অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এম এ মান্নান, আল্লামা সৈয়দ মছিহুদ্দৌলা, অধ্যক্ষ আল্লামা আহমদ হোসাইন আল কাদেরী, অধ্যক্ষ শাহ খলিলুর রহমান নিজামী, শাইখ আবু সুফিয়ান আবেদী, পীরজাদা ছাদেকুর রহমান হাশেমী, কাযী মুহাম্মদ সোলায়মান চৌধুরী, পীরজাদা সৈয়দ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদিসহ আরও অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ফ্রন্টের তুলে ধরা অন্য দাবিগুলো হলো-কওমি ও হেফাজত জঙ্গিদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি তাদের অর্থ ও জোগানদাতাদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা, খেলাফত মজলিসের নেতারা পাকিস্তানের শীর্ষ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত-এই তথ্য সঠিক হলে খেলাফত মজলিসকেও নিষিদ্ধ করা, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের রাজনৈতিক-ব্যক্তিগত পরিচয় ভুলে আদালতের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা।