রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আগুনে নিহত চারজনের পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ২৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ওই পরিবারগুলোকে এক মাসের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
এর আগে ১১ জানুয়ারি বিচারপতি জেবি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের দ্বৈত বেঞ্চ ইউনাইটেড হাসপাতালকে ৩০ লাখ টাকা করে তাৎক্ষণিক ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছিল। একইসঙ্গে প্রত্যেক পরিবারকে ১৫ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করা হয়েছিল।
এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবার আপিল করেছিল ইউনাটেড হাসপাতাল। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার এই ক্ষতিপূরণের আদেশ দেয়া হয়।
গত বছরের ২৭ মে রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মধ্যে চারজন পুরুষ এবং একজন নারী ছিলেন।
একই বছরের ৩০ মে পাঁচ জন নিহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করেন আইনজীবী নিয়াজ মোহাম্মদ মাহবুব।
বৃহস্পতিবারের শুনানিতে হাসপাতালের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান খান ও তানজীব উল আলম। অন্যদিকে রিটের পক্ষে ছিলেন অনিক আর হক ও নিয়াজ মোহাম্মদ মাহবুব।
আইনজীবী অনিক আর হক বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ কিছুটা পরিবর্তন করে নিহত চার পরিবারকে ২৫ লাখ টাকা করে প্রাথমিক ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এক মাসের মধ্যে এ টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।’
আইনজীবী নিয়াজ মোহাম্মদ মাহবুব বলেন, ‘গত বছরের ১৪ জুলাই বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক বেঞ্চ পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে চার ব্যক্তির প্রত্যেক পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এখতিয়ার না থাকায় ওই বেঞ্চ তখন রুল জারি করতে পারেননি। এ কারণে আপিল বিভাগ সে আদেশ স্থগিত করে পুনরায় হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।’
তিনি বলেন, ‘নিহত পাঁচ জনের মধ্যে মনির হোসেনের পরিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করায় আদালত তার বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি।’
আগুনের ঘটনায় নিহতরা হলেন রিয়াজুল আলম, খোদেজা বেগম, ভেরুন এন্থনি পল, মো. মনির হোসেন, মো. মাহাবুব।