গরমে হাঁসফাঁস দেশবাসীর জন্য স্বস্তির আভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে জানিয়ে সংস্থাটি বলছে, মে মাসের শুরুতেই বৃষ্টি বাড়বে ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায়।
বৃষ্টি হলে গরমের ভাপটাও কমে আসবে। তামপাত্রা আট থেকে নয় ডিগ্রি সেলসিয়াস কমবে বলেও জানিয়েছে অধিদপ্তর।
বুধবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশে আজই কয়েকটি অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এভাবে আরও এক থেকে দুইদিন চলবে। এরপর মে মাসের শুরুতে সারা দেশেই বৃষ্টিপাত হবে। তখন আর গরমের এত প্রভাব থাকবে না। তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩২ ডিগ্রিতে নেমে আসবে।’
আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সিলেটে ২২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন ছিল ২৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত এক সপ্তাহ ধরেই তীব্র গরম আর বৃষ্টিহীনতা নিয়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছে। সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হওয়ার পর এই অবস্থার অবসানের প্রতীক্ষায় দেশবাসী।
এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বৃষ্টির সম্ভাবনা নিয়ে লেখালেখি চলছে। বলা হচ্ছে শক্তিশালী ক্রান্তীয় সেমি পূর্ণাঙ্গ বৃষ্টিবলয় ‘ঝুমুল’ ধেয়ে আসছে বাংলাদেশের দিকে।
অস্থির গরমে রাজধানীর হাতিরঝিলে শিশু-কিশোরদের লাফালাফি। ছবি: সাইফুল ইসলাম
তবে আবহাওয়া রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘বৃষ্টিপাতের তো এমন কোনো নাম হয় না। এটা এখনও আমার জানা নেই। এটা কেউ হয়ত তার মনমতো দিয়েছে। তবে এমনিতেই কাল থেকে আস্তে আস্তে বৃষ্টিপাত শুরু হবে।’
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ‘লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ জেলাসহ রংপুর ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত থকতে পারে।’
আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘দেশের অনেক অঞ্চলেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে মে মাসের প্রথম দিক থেকেই সারা দেশে কমবেশি বৃষ্টি হবে। পূবালী আর পশ্চিমা বায়ুর সংযোগে বৃষ্টি হবে। মাসের শুরুর দিকে এই সংযোগটা ভালো হবে। এখন কয়েকটি অঞ্চলে সংযোগ হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আজ কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, সিলেট বৃষ্টি হয়েছে। ৩০ তারিখের পর পর্যন্ত দেশের উপরের দিকে এমন বৃষ্টিপাত হতে থাকবে।’
গরম কেন বেশি
অধিদপ্তরের থেকে বলা হয়েছে এই সময়টাতে সূর্য একদম মাথার উপরে অবস্থান করে ও লম্বাভাবে কিরণ দেয়। এখন দিন আগের তুলনায় বড় হয়ে গেছে। তাই গরম পড়েছে।
তবে এবারের গরমের ধরণে ছিল ভিন্নতা। বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ কম থাকায় অনেক গরম অনুভূত হলেও শরীরে ঘাম ছিল না। শীতকালের মতো ঠোঁট ফেটে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘আসলে গরম তো দুইভাবে পড়ে আমাদের দেশে। এবারের গরমে বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ কম ছিল। সাধারণত ৭০ ভাগ বা এর বেশি আদ্রতা থাকে কিন্তু এবার তা ছিল না। তাই গরম অনুভূত হয়েছে বেশি।’
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সীতাকুণ্ডু, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, ফেনী, রাজশাহী এবং পাবনা অঞ্চলসহ ঢাকা, রংপুর, খুলনা, বরিশাল সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে।