বিশ্বের ৬২তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা ‘স্পুৎনিক-ভি’ অনুমোদন দেয়ায় ধন্যবাদ জানিয়েছে রাশিয়া।
বৈশ্বিক পরাশক্তিটি মনে করছে, এ অনুমোদন বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করার পাশাপাশি করোনাবিরোধী লড়াইকে বেগবান করবে।
ঢাকার রাশিয়া দূতাবাসের বুধবার দুপুরের এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ‘স্পুতনিক-ভি’ জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। এর মাধ্যমে রাশিয়ার টিকার উচ্চ কার্যকারিতা ও সুরক্ষার বিষয়টি প্রমাণের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
‘এ পদক্ষেপে (টিকার অনুমোদন) করোনাভাইরাস মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দুই দেশের মধ্যে গঠনমূলক সহযোগিতা জোরদার হবে। রাশিয়ার ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ৬২তম দেশ।’
এ মুহূর্তে রাশিয়া ছাড়াও অন্তত ৬০টি দেশে ‘স্পুৎনিক-ভি’ টিকা দেয়া হচ্ছে। আর্জেন্টিনা, ফিলিস্তিন, ভেনেজুয়েলা, হাঙ্গেরি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, স্লোভাকিয়া, মেক্সিকো, ইসরায়েল, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারতসহ অনেক দেশই এই টিকার চাহিদার কথা জানিয়েছে।
সুপারিশের এক ঘণ্টার মধ্যে অনুমোদন
স্পুৎনিক-ভি টিকা জরুরি ব্যবহারে অনুমোদনের সুপারিশের এক ঘণ্টা মধ্যে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে জরুরি প্রয়োজনে এই টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।’
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জরুরি বৈঠকে স্পুৎনিক-ভি টিকার প্রয়োগের বিষয়ে সুপারিশ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের টেকনিক্যাল কমিটি।
এই টিকা বাংলাদেশেই উৎপাদন হবে। ফর্মুলা গোপন রাখার শর্তে রাশিয়া ও বাংলাদেশ এ বিষয়ে আগেই সমঝোতা চুক্তি করেছে।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে করোনা টিকার ৩ কোটি ডোজ কিনতে গত বছরের নভেম্বরে চুক্তি করে বাংলাদেশ। এর আওতায় দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে।
ভারত সরকারের দুই দফা উপহারের ৩২ লাখ ডোজ মিলে ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা আসে দেশে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ মানুষ প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার জন্য রাখা হয়েছে ৪২ লাখ টিকা।
বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভারত নিজস্ব চাহিদার কথা বিবেচনা করে সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের টিকার রপ্তানি গত ২৪ মার্চ স্থগিত করে। ভারত সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে আগামী এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত টিকা রপ্তানিতে বিলম্ব হতে পারে।
কোভ্যাক্সের আওতায় ১৮০টি দেশও সিরাম উৎপাদিত টিকা পাবে। কিন্তু রপ্তানি স্থগিত হওয়ায় এসব দেশও টিকা পাচ্ছে না। ফলে সিরামের কাছ থেকে টিকার নতুন চালান পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এই সংকট কাটাতে টিকার বিকল্প উৎস খুঁজছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে রাশিয়ার পাশাপাশি চীন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে সরকার।