নিজেদের বারবার অরাজনৈতিক দাবি করা হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির সিংহভাগ সদস্যই ছিলেন বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক দলের নেতা। তারা হেফাজতকে ব্যবহার করে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করার অভিযোগের মধ্যে এই কমিটি ভেঙে দেয়ার পর এবার রাজনীতি থেকে দূরে থাকা কওমি আলেমদের নিয়ে কমিটি গঠনে মনযোগী হয়েছে সংগঠনটি।
গত মার্চ ও এপ্রিলের শুরুতে দেশের নানা স্থানে তাণ্ডবের পর ১১ এপ্রিল থেকে সরকার গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করলে একাধিকবার হেফাজতের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা রাজনৈতিক সংগঠন না। ক্ষমতায় কে থাকল না থাকল, তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই।
হেফাজত আমিরের বারবার বক্তব্যের পাশাপাশি গত ১৯ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠক করেও এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
তবে সরকার অভিযোগ করে আসছে, হেফাজতের যেসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের রাজনৈতিক অভিলাষ ছিল। বিশেষ করে, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের চক্রান্ত করেছিলেন উগ্রবাদ ছড়িয়ে।
সমঝোতার চেষ্টায় মরিয়া হেফাজত আমির জুনায়েদ বাবুনগরী এর মধ্যে রোববার রাতে ১৫১ সদস্যের সেই কমিটি ভেঙে দেন। সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে এই আহ্বায়ক কমিটির সবাই বিলুপ্ত কমিটির নেতা হলেও একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে এদের কেউই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন।
এই কমিটি হেফাজতের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার উদ্যোগ নেবে।
হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির এক কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের ওপর উপর থেকে চাপ আছে যে রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট কাউকে হেফাজতের কমিটিতে না রাখার জন্য। পরবর্তীতে অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি করব।’
বিলুপ্ত ও আহ্বায়ক কমিটির মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদীর কাছ থেকে অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ফোন করলে তিনি লাইন কেটে দেন।
তবে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘অরাজনৈতিক ব্যক্তি যারা আছেন, তাদের বা মুরুব্বী ও বয়স্ক নেতাদের নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। যদি এটার কোনো সম্প্রসারণ হয়, তাহলে একই ক্যাটাগরির লোক দিয়ে তা করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সদ্য বিলুপ্ত হেফাজতে ইসলামের দাওয়াহ সম্পাদক ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান কাসেমীও কোনো কিছু বলতে রাজি হননি।
আহ্বায়ক কমিটিতে যারা, তারা কারা
হেফাজত বরাবর নিজেদের অরাজনৈতিক সংগঠন দাবি করলেও বিলুপ্ত কমিটির শতাধিক নেতারই রাজনৈতিক পরিচয় আছে। তারা কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক বিভিন্ন দলের নেতা ছিলেন।
তবে বিলুপ্ত ও আহ্বায়ক কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরী কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। মহাসচিব নূরুল ইসলাম জিহাদীরও রাজনৈতিক কোনো পরিচয় নেই। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
আহ্বায়ক কমিটির প্রধান উপদেষ্টা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এক সময় ইসলামী ঐক্যজোটের সহ-সভাপতি থাকলেও, ২০১৮ সালে তিনি পদত্যাগ করেন।
সদস্য সালাহউদ্দীন নানুপুরী চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির জামিয়া ওবায়দিয়া নানুপুর মাদ্রাসার মহাপরিচালক। তবে কখনও কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।
আরেক সদস্য মিজানুর রহমান (পীরসাহেব দেওনা) গাজীপুরের কাপাসিয়ার মাদ্রাসা দাওয়াতুল হকের প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও, বিএনপি নেতা আ স ম হান্নান শাহের মৃত্যুর পর আর রাজনীতি করেননি। তিনি কাপাসিয়ার শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।
বিলুপ্ত কমিটিতে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গী যারা
নতুন কমিটিকে যাদেরকে রাখা হয়, তাদের মধ্যে যাদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে, তারা সবাই বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোট ২০ দলের শরিক।
ওই কমিটির মহাসচিব করা হয় নূর হোসাইন কাসেমীকে। তিনি বিএনপি জামায়াত জোটের শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীর একাংশের নেতা। পরে তিনি মারা যান।
দলের নেতা মাওলানা জিয়াউদ্দীন, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক জায়গা পান সংগঠনের উপদেষ্টামণ্ডলীতে।
নায়েবে আমির পদে জমিয়তের ছয়জন নেতা জায়গা পান। তারা হলেন মাওলানা আব্দুল হামিদ (মধুপুর), মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ সাদী, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা আনোয়ারুল করিম (যশোর) ও মাওলানা নুরুল ইসলাম খান (সুনামগঞ্জ)।
নতুন চার যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন এই দলের। তাদের দুজন হলেন মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব ও মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির।
সহকারী মহাসচিব হন মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী ও মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।
সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক হন মাওলানা মাসউদুল করীম, মাওলানা শামসুল ইসলাম জিলানী ও মাওলানা তাফহিমুল হক।
অর্থ সম্পাদক হন মুফতি মুনির হোসাইন কাসেমী ও সহকারী অর্থসম্পাদক মাওলানা লোকমান মাজহারী।
সহকারী প্রচার সম্পাদক হন মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াকুব ওসমানী, মুফতি শরীফুল্লাহ ও মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান।
আইন বিষয়ক সম্পাদক হন মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী। তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে সংসদ নির্বাচন করেছেন।
দাওয়াহ সম্পাদক হন মাওলানা নাজমুল হাসান, সহকারী আন্তর্জাতিক সম্পাদক হন মাওলানা শুয়াইব আহমদ, মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, সহকারী দপ্তর সম্পাদক হন মাওলানা সিদ্দিকুল ইসলাম তোফায়েল।
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনীত হন জামিল আহমদ চৌধুরী, বশির আহমদ, তাফাজ্জল হক আজিজ, আলী আকবর সাভার, আবু আব্দুর রহিম, আব্দুল কুদ্দুস, মুহাম্মদ উল্লাহ জামি, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী।
বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক খেলাফত মজলিসেরও ছয়জন নেতা স্থান পান কমিটিতে। এদের মধ্যে উপদেষ্টামণ্ডলীতে ছিলেন দলের আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক। নায়েবে আমির হন আহমাদ আবদুল কাদের, যিনি ছাত্রজীবনে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি ছিলেন।
এই দলের মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন হন নায়েবে আমির।
সহকারী আন্তর্জাতিক সম্পাদক হন মাওলানা আবদুল কাদের সালেহ ও আহমদ আলী কাসেমী।
মামুনুলের দলের যারা ছিলেন
সাম্প্রতিক সময়ে তুমুল আলোচিত হয়ে ওঠা মামুনুল হকের রাজনৈতিক দল খেলাফত মজলিসের আরেক অংশও ১৯৯৯ সালে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয় ইসলামী ঐক্যজোটের শরিক হিসেবে।
তবে ২০০৬ সালে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করলেও ২০১৩ সালের দিকে আবার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে দুই দলের। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে জোটবদ্ধ আর হয়নি তারা।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে অবস্থানের সময় মামনুল হকই সকালে নতুন সরকারের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এই দলের আমির মাওলানা ইসমাঈল নূরপুরীকে বিলুপ্ত কমিটির উপদেষ্টা করা হয়। নায়েবে আমির হন সাবেক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক। যুগ্ম মহাসচিব হন মামুনুল হক।
মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী ও মাওলানা জালালুদ্দিন হন সহকারী মহাসচিব। যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন হন সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক। মওলানা ফয়সাল আহমদ হন সহ প্রচার সম্পাদক।
দলটির বেশ কয়েকজন ভক্ত ও অনুসারী আলেম জায়গা পেয়েছেন হেফাজতের বিভিন্ন পদে।
হেফাজতের উত্থান যেভাবে
২০১০ সালে নারীনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের অংশ হিসেবে কওমি ঘরানার সব দল ও সংগঠন মিলে গঠন করে হেফাজতে ইসলাম। আমির করা হয় চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রধান শাহ আহমেদ শফীকে। কওমি আলেমদের মধ্যে তিনি মুরুব্বি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
তবে সংগঠনটি আলোচিত হয়ে উঠে ২০১৩ সালের এপ্রিল-মে মাসে।
ওই বছর যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণমঞ্চ নামে যে আন্দোলন গড়ে ওঠে, সেই আন্দোলনের নেতাদের ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে তাদের ফাঁসি দাবি করে হেফাজত। তারা নানা কর্মসূচি দিয়ে ৫ মে ঢাকা অবরোধের ঘোষণা দেয়।
সেদিন বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের পর হঠাৎ করে বিকেলে সংগঠনটি শাপলা চত্বরে সমাবেশের ঘোষণা দেয়। আর বিকেলে সেখানে জড়ো হওয়ার পর সেখান থেকে সরে দাঁড়াতে অস্বীকার করে। একপর্যায়ে তারা সরকার পতনের দাবি করতে তাকে।
দিনভর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় হেফাজত কর্মীরা। ওই সমাবেশে অংশ নিয়ে পরদিন থেকে নতুন সরকারের ঘোষণাও দেয়া হয়।
সেই সমাবেশকে ঘিরে হেফাজত সে সময়ের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছিল বলে হেফাজতের গ্রেপ্তার এক নেতা আদালতে জানিয়েছেন। তিনি জানান, বিএনপির এক নেতা তাদের পাঁচ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সেই নেতা হলেন আবদুল আউয়াল মিন্টু।
যদিও হেফাজতের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
তবে হেফাজত যখন শাপলা চত্বরে অবস্থান করে, সে সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার কর্মী-সমর্থকদের রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান। যদিও বিএনপির সেই স্বপ্ন সে সময় পূরণ হয়নি।
ওই রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে হেফাজত কর্মীরা শাপলা চত্বর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। আর অভিযানের পর হাজার হাজার মানুষকে হত্যার গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
বিএনপি ঘরানা ত্যাগ করে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক
যদিও পরে কারও নাম দিতে পারেননি হেফাজত আর সংগঠনের সে সময়ের শীর্ষ নেতারা। পরে বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গ ত্যাগ করে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন।
এর একপর্যায়ে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ ডিগ্রি দাওরায়ে হাদিসকে ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্সের সমমান দিয়ে কওমি অঙ্গনের দীর্ঘ বছরের দাবি পূরণ করে সরকার। এই সনদের স্বীকৃতির আশায় ১৯৯৯ সালে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছিল কওমি রাজনৈতিক দলগুলোর জোট ইসলামী ঐক্যজোট।
পরিস্থিতি পাল্টে যায় গত সেপ্টেম্বরে
গত সেপ্টেম্বরে হাটহাজারী মাদ্রাসায় হাঙ্গামায় আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর পরিস্থিতি আবার ঘোলাটে হয়।
গত ১৫ নভেম্বর বাবুনগরীকে আমির করে হেফাজতের ইসলামের ১৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।
সংগঠনটি বরাবর নিজেদের অরাজনৈতিক দাবি করে আসলেও এই ১৫১ জনের সিংহভাগেরই রাজনৈতিক পরিচয় আছে। আর এদের বেশির ভাগই বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক।
এবার কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ২০ দলীয় জোট ছেড়ে আসা দলগুলোর নেতাদের বাদ দেয়ার পরই হেফাজতের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মাওলানা রুহুল আমিন দুটি কওমি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান। তাকেও কোনো পদে রাখা হয়নি, যদিও বাকি চারটি বোর্ডের চেয়ারম্যানদের রাখা হয়েছে।
রুহুল আমিন আওয়ামী ঘনিষ্ঠ আলেম হিসেবে পরিচিত। তিনিও কওমি সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
বাদ পড়েছেন বিএনপি-জামায়াত জোট থেকে বের হয়ে যাওয়া ইসলামী ঐক্যজোটর মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ। তিনি আগের কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন।
তবে ২০ দল ছাড়ার পর ইসলামী ঐক্যজোট থেকে বের হয়ে অন্য দলে যোগ দেয়া জুনায়েদ আল হাবিবকে ঠিকই কমিটিতে রাখা হয়েছে।
রাজনীতি নিয়ে নাক গলানো শুরু
হেফাজতের নতুন কমিটি গঠন হওয়ার পরেই সংগঠনের নেতারা রাজনৈতিক বিষয়ে নানা বক্তব্য দিতে থাকেন।
হেফাজত নেতারা নানা সভা সমাবেশ ও ওয়াজে বলতে থাকেন, তাদের কথা শুনে দেশ চালাতে হবে। এমনকি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তারা। এমন বক্তব্যও আসে যে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হলে, তা টেনে ফেলে দেয়া হবে। আবার শাপলা চত্বর পরিস্থিতি তৈরি করা হবে।
তবে হেফাজত সহিংস হয়ে ওঠে গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ভারতের সরকারপ্রধান নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে।
মোদি ঠেকাতে হঠাৎ করেই মাঠে নামে সংগঠনটি। যদিও সফরের চার দিন আগে ২২ মার্চ ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি ঘোষণা দেয়, মোদির সফরের বিরোধী হলেও তারা কোনো কর্মসূচি দেবে না।
তবে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ২৫ মার্চ বায়তুল মোকাররমের সামনের সমাবেশে ঘোষণা করেন, মোদি দেশে এলে সরকার পতনের ক্ষেত্র তৈরি করবেন তারা।