মাদ্রাসার উন্নয়নের কথা বলে বিভিন্ন সময়ে হেফাজতকে টাকা দিয়ে আসছেন এমন ৩১৩ জন অর্থদাতার তালিকা তৈরি করেছে গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি। সেই টাকা সত্যিই মাদ্রাসার উন্নয়নে খরচ হয়েছে কিনা তা জানতে তদন্ত চলছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি বলেন, ‘আমরা ৩১৩ জনের নামের একটি তালিকা তৈরি করেছি, যারা কওমি মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য নিয়মিত টাকা দিত। সেই টাকা মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজেই ব্যবহার হতো নাকি দেশজুড়ে নানা সময় যেসব সহিংসতা হয়েছে সেগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে তা জানতে আমরা তদন্ত করে যাচ্ছি।
‘পাশাপাশি ওই ৩১৩ জন অথর্দাতার অনুদানের উদ্দেশ্য ও তাদের অর্থের উৎসও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে অসঙ্গতি পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
গ্রেপ্তার হওয়া হেফাজত নেতা মামুনুল হকের দুটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, ‘তার ওই দুটি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।’
সাত দিনের রিমান্ড শেষ আদালতে মামুনুল স্বীকারোক্তি দেননি কেন জানতে চাইলে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘স্বীকার করা না করা এটা তার ব্যাপার, আমরা তদন্ত করে যা তথ্য প্রমাণ পাব সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
হেফাজতে শফীপন্থিদের সরিয়ে নেতৃত্ব পরিবর্তন বিষয়েও তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান এই ডিবি প্রধান। বলেন, ‘জুনায়েদ বাবুনগরীর ছেলের বিয়েতে মামুনুল হক, জুনায়েদ আল হাবিবসহ কয়েক নেতার বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে আল্লামা শফিকে সরিয়ে দিয়ে বাবুনগরীকে আমির করার পরিকল্পনা হয়।’
সম্প্রতি হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে হাটহাজারিতে দুটি মামলা হয়েছে, সেই দুই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে কি না জানতে চাইলে হাফিজ আক্তার বলেন, তদন্তের স্বার্থে যখন যাকে প্রয়োজন তাকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
সাম্প্রতিক সহিংসতার পর এখন পর্যন্ত ২১ জন হেফাজত নেতাকে গ্রপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাম্প্রতিক মামলাসহ ২০১৩ সালের মামলাগুলোর বিষয়েও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রাজধানীতে দায়ের হওয়া ১৭টি মামলার তদন্ত করছে ডিবি।