চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আমির ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে।
হাটহাজারী থানায় বৃহস্পতিবার মামলা দুটি করা হলেও সোমবার বিষয়টি জানাজানি হয়েছে।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, থানা ভবনে হামলা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে ভাঙচুর ও ডাকবাংলোয় আগুন দেয়ার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বুধবার তিনটি মামলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দুটিতে আসামি করা হয়েছে বাবুনগরীকে।
তিনটি মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলাল উদ্দিন, উপজেলা জামায়াতের আমিরসহ অজ্ঞাত পরিচয় তিন হাজার ব্যক্তি।
একটি মামলার বাদী চট্টগ্রাম পুলিশের জেলা বিশেষ শাখার (ডিএসবি) কনস্টেবল মো. সোলায়মান। ওই মামলায় বাবুনগরী, হেফাজত নেতা মীর ইদ্রিস, নাছির উদ্দিন, জাকারিয়া নোমান, আহসান উল্লাহসহ ১৬ জনের নামসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
২৬ মার্চের ঘটনায় বুধবার কেন মামলা করা হয়েছে সে বিষয়ে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, জড়িত আসামিদের শনাক্ত ও নাম-ঠিকানা যাচাই করতে সময় লেগেছে। নিরীহ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন তাই যাচাই করে প্রকৃত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। এখানে অন্য কিছু ছিল না।
এ ঘটনায় এর আগেও বেশ কিছু মামলা হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের দিন শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকায় বায়তুল মোকাররমে সংঘর্ষ হয়।
জাতীয় মসজিদের এই ঘটনার জেরে ওইদিন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতেও পুলিশের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে হেফাজত সমর্থকরা।
এ সময় তারা ডাক বাংলো, ভূমি অফিস ও হাটহাজারী মডেল থানায় হামলা চালায়। হেফাজতের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় থানা এলাকা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালায়। এতে নিহত হন চারজন।
এরপর হেফাজতের ডাকা হরতালে নারায়ণগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দিনভর সহিংসতা চালায় হেফাজত কর্মীরা। এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলায় হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রোববার রাতে হেফাজতের কমিটি ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দেন বাবুনগরী। কমিটি বিলুপ্ত করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দেয়া হয়।