সাত দিনের রিমান্ড শেষে আরও একটি মামলায় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে রিমান্ডে পেতে চাইছে পুলিশ।
মোহাম্মদপুর থানায় নাশকতার মামলার পর এবার ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরের ঘটনায় মতিঝিল থানায় করা একটি মামলায় তাকে ১০ দিন হেফাজতে রাখার আবেদন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগ।
রোববার আদালতে এ আবেদন করা হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন আদালতের মতিঝিল থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার একজন সদস্য।
মঙ্গলবার এই আবেদনের ওপর আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে জানান ওই কর্মকর্তা।
গত কয়েক বছরে তুমুল আলোচিত এই হেফাজত নেতাকে গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রহমানিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে মোহাম্মদপুর থানায় করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলেও পরে আর অনেক মামলা পাওয়া যায় তার নামে।
গ্রেপ্তারের পর দিন মামুনুলকে আদালতে তোলা হয়। বেআইনি সমাবেশ, পুলিশকে মারধর, হত্যাচেষ্টা ও চুরির অভিযোগে করা সেই মামলায় সাত দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পায় পুলিশ।
মহানগর আদালতের হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী এ রিমান্ডের আদেশ দেন।
জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুলের ব্যক্তিগত জীবনে একাধিক নারী সংশ্লিষ্টতা ছাড়াও তার জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে নানা তথ্য পাওয়ার কথাও জানিয়েছে পুলিশ।
এই সাত দিনের রিমান্ড শেষ হচ্ছে সোমবার। তার আগের দিনই নতুন করে রিমান্ড আবেদন করা হলো।
মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নতুন যে মামলায় রিমান্ড চাওয়া হয়েছে, সেটি আট বছর আগের। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে উঠা গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে জড়িতদেরকে ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকা অবরোধের ডাক দেয় হেফাজত।
২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের পর মতিঝিলের শাপলা চত্বর। ছবি: সাইফুল ইসলাম
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি না থাকলেও হঠাৎ করে সংগঠনটি শাপলা চত্বরে সমাবেশের ঘোষণা দেয়। আর বিকেলে সেখানে জড়ো হওয়ার পর সেখান থেকে সরে দাঁড়াতে অস্বীকার করে। এক পর্যায়ে তারা সরকার পতনের দাবি করতে তাকে।
দিনভর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় হেফাজত কর্মীরা। মামুনুল হক ওই সমাবেশে অংশ নিয়ে পরদিন থেকে নতুন সরকারের ঘোষণা দেন।
সেই সমাবেশকে ঘিরে হেফাজত সে সময়ের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছিল বলে হেফাজতের গ্রেপ্তার এক নেতা আদালতে জানিয়েছেন। তিনি জানান, বিএনপির এক নেতা তাদেরকে পাঁচ কোটি টাকা অর্থ সহায়তা দিয়েছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সেই নেতা হলেন আবদুল আউয়াল মিন্টু।
যদিও হেফাজতের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।