বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রানা প্লাজা ধস: দুই আসামিতে আটকে বিচার

  •    
  • ২৪ এপ্রিল, ২০২১ ২১:১৪

এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। আসামি ৪১ জন, কারাগারে আছেন মাত্র একজন। পলাতক ছয়জন, মারা গেছেন দুইজন। আসামিদের মধ্যে দুই জনের পক্ষে আছে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ। ফলে থাকায় থমকে আছে বিচার।

রানা প্লাজা ট্রাজেডির আট বছর পেরিয়ে গেলেও থমকে আছে বিচারকাজ। এতে বাধা দুই আসামি। তাদের পক্ষে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় এ ঘটনায় তিনটি মামলার একটিও প্রথম দরজা পার হতে পারেনি।

মামলাগুলোর সাক্ষ্যগ্রহণ কবে নাগাদ শুরু হবে সেটিও সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। জানালেন, উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের ফলে আটকে আছে বিচার কাজ।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা ধসে পড়ে। ওই ঘটনায় স্মরণকালের সর্বোচ্চ সংখ্যক শ্রমিক প্রাণ হারান। মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ১ হাজার ১৭৫ জন; আহত ২ হাজারেরও বেশি।

এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়। যার মধ্যে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে সাভার থানায় একটি। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) একটি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি মামলা করে।

মামলা তিনটিতে চার্জশিটভুক্ত দুই আসামির পক্ষে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ বন্ধ রয়েছে বলে নিউজবাংলাকে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. মিজানুর রহমান।

উচ্চ আদালতের এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে কি না সে বিষয়ে কোনো সদুত্তর নেই তার কাছে।

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের ঘটনার হত্যা মামলায় দুজন আসামির পক্ষে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ বহাল থাকার কারণে সাক্ষ্যগ্রহণ বন্ধ রয়েছে।’

২০১৬ সালের ১৮ জুলাই হত্যা মামলায় ভবনটির মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ মো. কুদ্দুস জামান অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

বিচারিক আদালতের অভিযোগ গঠনের এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আট আসামি হাইকোর্টে আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে এই আট জনের পক্ষে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেয় উচ্চ আদালত।

রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে হাত-পা হারিয়েছেন অনেকেই। ছবি: নিউজবাংলা

এর মধ্যে ছয় আসামির ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হলেও সাভার পৌরসভার তৎকালীন মেয়র রেফায়েত উল্লাহ এবং তৎকালীন কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী খানের পক্ষে স্থগিতাদেশ এখনও বহাল আছে। এরপর থেকে বিচারিক আদালতেও মামলার বিচার কাজ স্থগিত হয়ে আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মন্টু ঘোষ নিউজবাংলাকে জানান, রানা প্লাজা ধসের জন্য ছয়জন সরকারি কর্মকর্তাকে অভিযোগভুক্ত আসামি করার অনুমতি না পাওয়ার কারণে তিন বছর ঝুলেছিল এই মামলা।

সে সময় জনপ্রশাসন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের যুক্তি ছিল, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের যারা বড় অপরাধ করেননি, তাদেরকে অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি করার অনুমতি দিতে পারবেন না তারা।

শেষ পর্যন্ত সরকারের অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

মন্টু ঘোষ বলেন, রানা প্লাজা ধস হত্যা মামলায় ৪১ আসামির মধ্যে বর্তমানে কারাগারে আছেন মাত্র একজন আসামি। তিনি হলেন ভবনটির মালিক সোহেল রানা।

আর জামিনে আছেন ৩২ আসামি। পলাতক ছয়জন। সোহেল রানার বাবা আবদুল খালেকসহ মারা গেছেন দুই আসামি।

মামলায় সংশ্লিষ্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পাভেজ হাসেম নিউজবাংলাকে বলেন, মামলার বিচারকাজ বিলম্বিত হওয়ার অন্যতম বিষয় হচ্ছে কোনো কারণে মামলার কার্যক্রম স্থগিত হওয়া।

এ ছাড়া পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি না করা, সাক্ষী না আসা, রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করতে না পারা, গুরুত্বপূর্ণ শুনানির দিনে সময়ের আবেদন করে সময় পার করা, এসব নানা কারণে মামলার বিচারকাজ বিলম্বিত হচ্ছে বলে মনে করেন এই আইনজীবী। তবে রাষ্ট্রপক্ষ আন্তরিক হলে বিচারকাজ আরও দ্রুত করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর