করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ ২৮ তারিখে পর আর থাকছে না- সরকারের এমন ঘোষণার পর ঢাকা ফিরতে শুরু করেছে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ।
বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী নিয়ে পার হতে দেখা গেছে পাঁচটি ফেরি। যদিও যাত্রীবাহী সব পরিবহন বন্ধে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
ঘাট সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল থেকে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকায় ফেরিগুলো চলছে। ঘাটের দুই প্রান্তেই রয়েছে ছোট ছোট গাড়ির সারি। গাড়ির চাপ বাড়লে বাড়ানো হবে ফেরির সংখ্যা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) বাংলাবাজার ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক ফারুক আহমেদ জানান, ‘সকাল থেকে বিরতিহীনভাবে পাঁচটি ফেরি চলছে। বর্তমানে ঘাটের অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে কিছু ছোট ছোট গাড়ির সারি রয়েছে। সন্ধ্যার পর গাড়ির চাপ বেড়ে গেলে প্রয়োজনে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে।'
লকডাউনে যাত্রীবাহী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞার পরও কেন সাধারণ মানুষ ঘাটে আসছেন, এ প্রশ্ন করা হলে তিনি দাবি করেন, ঘাট পার হচ্ছে পণ্যবাহী যান, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবার গাড়ি। এসব যানে করে ঢাকার দিকে সাধারণ যাত্রীরা যাচ্ছেন কি না সে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
মুন্সিগঞ্জ অংশের শিমুলিয়া ঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, ফেরি থেকে নামছে অসংখ্য মানুষ। বেশিরভাগই কোনো যানবাহনে ছিলেন না, পুরো পথ ফেরিতে দাঁড়িয়ে থেকেই এসেছেন। পণ্যবাহী যানের চাপ তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে যাত্রীদের জটলাও দেখা গেছে সেখানে।
কথা বলে জানা গেল, তারা মূলত রাজধানীতে বিভিন্ন দোকান-পাট ও শপিংমলের মালিক ও কর্মচারী। রোববার থেকে শপিংমল খুলে দেয়া হবে- এই ঘোষণা শুনে তারা রাজধানী ফিরছেন।
ছোট ছোট টেম্পু, অটোরিকশা বা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে তারা শিমুলিয়া ঘাটে আসেন। সেখান থেকে হেঁটেই ফেরিতে ওঠেন। তবে শিমুলিয়া ঘাটে নেমে ঢাকায় যাওয়ার জন্য গণপরিবহন না পাওয়ায় ভোগান্তি হচ্ছে বলে জানান তারা। ছোট ছোট পিকআপভ্যানে ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে অনেকে রওনা হয়েছেন ঢাকার দিকে।
বরিশাল থেকে আসা মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে আসেন তিনি। সেখানে কয়েকবারের চেষ্টায় ফেরি পার হতে পারলেও শিমুলিয়া ঘাটে এসে ঝামেলায় পড়েছেন। গণপরিবহন বন্ধের সুযোগে অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানগুলো কয়েকগুণ বেশি ভাড়া হাঁকছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইলিয়াস হোসাইন বলেন, পারিবারিক কাজে তিনি ঢাকা যাবেন। ঘাটে গণপরিবহন সংকট থাকায় পিকআপে করে রওনা দিয়েছেন।
এই ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়াত আহম্মেদ অবশ্য সাধারণ যাত্রীদের পারাপারে বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, পাঁচটি ফেরি দিয়ে লকডাউনের আওতামুক্ত গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। তবে যাত্রীরা জোর করে ফেরিতে উঠছেন। তাদের নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি প্রশাসন দেখছে।
শিমুলিয়া ফেরিঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) হিলাল উদ্দিন বলেন, লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ থাকায় যাত্রীরা নিষেধ অমান্য করে ফেরিতে উঠে পদ্মা পার হচ্ছেন।