‘জঙ্গি সংগঠন’ আখ্যা দিয়ে হেফাজতে ইসলামকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন।
আহলে সুন্নাতের ৫৫১ আলেমের স্বাক্ষর করা শনিবারের বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের উচ্চাভিলাষ থেকে দেশজুড়ে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে হেফাজত। সংগঠনটি মানবিক বা চুক্তিভিত্তিক বিয়ের নামে জঘন্য অপরাধ ঢাকতে প্রচলিত ইসলামের মৌলিক বিধিবিধানের ওপর হস্তক্ষেপ করছে।
আলেমরা বলেন, সামাজিক অনাচারে যুক্ত হওয়া, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা, জানমালের ক্ষতিসাধন করা ইসলাম সমর্থন করে না। এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি বা সংগঠনের কাছে দেশ-মিল্লাত-মাযহাব কখনো নিরাপদ নয়।
২০১০ সালে জন্মের পর থেকেই হেফাজত সহিংসতা ছড়িয়ে দিচ্ছে দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কখনো ইসলাম প্রচারক আল্লাহর ওলিদের মাজার-খানকাহ শরিফ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে তারা। আবার কখনো দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সুফিবাদি জনতাকে প্রকাশ্যে হামলার হুমকি দিয়ে এ দেশে উগ্র জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
হেফাজত কর্মীরা সরকারি বেসরকারি স্থাপনায় হামলার পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়ায় মার্চ ও এপ্রিলের শুরুতে
আলেমরা জানান, হেফাজতের সঙ্গে ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের দূরতম সম্পর্ক নেই। ইসলাম রক্ষার নামে উগ্র হেফাজতিদের রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের উচ্চাভিলাষ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে গোটা আলেম সমাজ লজ্জিত।
বিবৃতিতে সরকারের উদ্দেশে বলা হয়, ‘হেফাজতকে উগ্র জঙ্গি সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করুন। দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখুন। দেশে প্রচলিত শিক্ষানীতি, আইন এবং নীতিমালাবিরোধী কওমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-বোর্ডগুলোর ওপর পরিপূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করুন।’
গত ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশনে আগুনের পর সংকেত ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানে ট্রেনের যাত্রাবিরতি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে
হেফাজতের নেতা-কর্মীদের আলেম লেবাসধারী জঙ্গিগোষ্ঠী আখ্যা দিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করারও আহ্বান জানিয়েছেন আহলে সুন্নাতের নেতারা।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা ও হেফাজত নেতা মামুনুল হকের রিসোর্ট-কাণ্ডের ইস্যুতে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় ভাঙচুর ও সহিংসতায় জড়ান হেফাজতের অনুসারীরা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, মামুনুল রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। এ জন্যই পরিকল্পিতভাবে একের পর এক সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছিলেন তিনি।
সহিংস হয়ে উঠা হেফাজতকে থামাতে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে গ্রেপ্তার অভিযান
১৮ এপ্রিল রোববার দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মামুনুল হককে।
সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা হয় মামুনুলের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর তাণ্ডবের ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।