চলমান লকডাউনের পর শর্ত সাপেক্ষে গণপরিবহন চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার সকালে বরিশাল সড়ক জোন, বিআরটিসি ও বিআরটিএর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা জানান।
কাদের বলেন, ‘চলমান লকডাউনের পরে জনস্বার্থ বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শর্তসাপেক্ষে সরকার গণপরিবহন চালুর সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে।’
লকডাউন শিথিল হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে।
‘গণপরিবহনে অর্ধেক আসন খালি রেখে যে ভাড়া নির্ধারণ ছিল, সেই ভাড়ার অতিরিক্ত নিলে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে’, হুঁশিয়ারি দেন কাদের।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন শেষ হচ্ছে ২৮ এপ্রিল মধ্যরাতে। আর বাড়ানো হবে না লকডাউনের সময়সীমা।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। তখন ক্ষোভে ফেটে পড়ে দোকান মালিক সমিতি ও কর্মচারীরা। দোকানপাট খুলে দেয়ার দাবিতে রাস্তায় নামে তারা।
৭ এপ্রিল থেকে অফিসমুখী মানুষের কষ্ট লাঘবে খুলে দেয়া হয় গণপরিবহন। লকডাউনের তৃতীয় দিন সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলা শুরু হয়। আর তাতে স্বাভাবিক রূপে ফিরে আসে রাজধানী ঢাকা।
তাতে আরও ক্ষুব্ধ হন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবির মুখে ৯ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে দোকানপাট ও শপিং মল খুলে দেয় সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ৮ এপ্রিল দেয়া এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৯ থেকে ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে দোকানপাটও শপিং মল খোলা রাখা যাবে।
স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে। তবে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া ‘সর্বাত্মক’ লকডাউনে আবারও কঠোর হয় সরকার। ঘোষণা আসে, বন্ধ রাখতে হবে সব শপিং মল, দোকানপাট। দ্বিতীয় দফায় ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয় আগের শর্ত মেনে।
এমন অবস্থার মধ্যে জীবন-জীবিকার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আবারও নমনীয় হয় সরকার। শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পাঠানো এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে ২৫ এপ্রিল থেকে খুলবে দোকানপাট ও শপিংমল। তবে বিকিকিনির সময় সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবন ও জীবিকার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট বাজার বা সংস্থার ব্যবস্থাপনা কমিটিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
ভার্চুয়াল বক্তব্যে বিএনপির সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে দেশ-বিদেশে যে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে, তার অর্থের জোগানদাতা ও পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে দেশের একটি রাজনৈতিক দল। অপপ্রচার আর গুজবের জন্য যাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়, সে বিষয়ে বিরোধী দল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রসঙ্গ টেনে সরকারের বিরূপ সমালোচনা করে থাকে। সাইবার ক্রাইম ও ডিজিটাল নিরাপত্তা সরকারের তৎপরতার বাইরে থাকবে, এমন মনে করার কোনো কারণ নেই।