করোনাভাইরাস মহামারিতে দেশব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউন থাকায় দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। এর মধ্যে কৃষকের পাকা ধান ঘরে তোলার সময় হয়েছে। এমন বাস্তবতায় তাদের সহায়তা করতে দেশের কয়েকটি জেলায় ধান কাটতে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগের অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
মুন্সিগঞ্জ
লকডাউনের ফলে বিগত বছরের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা কৃষকের ধান কাটায় সাহায্য করছে।
জেলার শ্রীনগরের আড়িয়াল বিলে শুক্রবার দরিদ্র কৃষক আবুল বেপারীর ছয় বিঘা পাকা ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলে দিয়েছে তারা।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ করোনার প্রথম ঢেউয়েও প্রান্তিক ও অসহায় কৃষককে ধান কাটার কাজে সহযোগিতা করেছিলাম। দ্বিতীয় ঢেউয়েও অসহায় কৃষককে ধান কেটে ঘরে তোলার ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা করব।’
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বলেন, ‘আমরা করোনার সংকটে ৪৩ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা ফ্রি টেলি হেলথ সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, অক্সিজেন সিলিন্ডার সার্ভিস, মাস্ক এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
নির্মল, বাবু ছাড়াও ধান কাটার কার্যক্রমে অংশ নেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি কাজী শহীদুল্লাহ্ লিটন, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সালমা হাই টুনী, উপ ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শ্যামল গোস্বামীসহ অনেকে।
গোপালগঞ্জ
জেলায় লকডাউনে শ্রমিক সংকট দেখা দেয়ায় কৃষক হাসান শরীফের এক বিঘা জমির ধান কেটে দেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
সদর উপজেলার গোপীনাথপুর শরীফ পাড়ায় বৃহস্পতিবার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক কে. এস. আশিকের নেতৃত্বে সংগঠনটির ২০ সদস্যের একটি দল কৃষক শরীফের জমির ধান কেটে দেন। পরে তারা সেই ধান মাড়াই করে ঘরে তুলে দেন।
আগামীতেও কৃষকের পাশে থেকে জমির ধান কেটে ঘরে তুলে দেবে বলে জানিয়েছে ছাত্রলীগের উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীরা।
নড়াইল
হারভেস্টার মেশিন দিয়ে বিনা মূল্যে দরিদ্র কৃষকদের বোরো ধান কেটে দেন নড়াইল জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ওয়াহিদুজ্জামান।
জেলার লোহাগড়া উপজেলার নলদী এলাকায় ইছামতি বিলে বৃহস্পতিবার কৃষকদের ধান কেটে দেয়া হয়। এতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় ওই এলাকার কৃষকদের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নড়াইলের উপপরিচালক দীপক কুমার রায় জানান, এ বছর জেলায় ৪৮ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২ লাখ ৬ হাজার ৬১০ মেট্রিক টন চাল।
নড়াইলে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এখন পুরোদমে চলছে বোরো ধান কাটা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা সহজে ঘরে ধান তুলতে পারবেন।
করোনাভাইরাসের কঠিন সময়ে হারভেস্টার মেশিন দিয়ে অতি সহজে কৃষকেরা ধান কাটতে পারছেন। এ মেশিন একই সঙ্গে ধানকাটা, ঝাড়া ও প্যাকেজিংয়ের কাজ সম্পন্ন করে।
ইছামতী বিলে ধান কাটার সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মিনা মরফিদুল হাসান শিল্পীসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা।