হেফাজতে ইসলামের আরও এক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এবার গ্রেপ্তার হয়েছেন ধর্মভিত্তিক সংগঠনটির ঢাকা মহানগরের সহ-দপ্তর সম্পাদক মাওলানা ইহতেশামুল হক সাখী।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তাকে বংশাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম নিউজবাংলাকে জানান, তাদের তেজগাঁও টিম হেফাজতের এই নেতাকে গ্রেপ্তার করে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ মার্চ রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে হেফাজতের কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষের জেরে সহিংসতা হয় চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
এ ঘটনার পর থেকে সরকারের সঙ্গে হেফাজতের দূরত্ব বাড়তে থাকে। বিভিন্ন মামলায় গত কয়েক দিনে গ্রেপ্তার হয় ধর্মভিত্তিক সংগঠনটির বেশ কয়েকজন নেতা।
১৮ এপ্রিল দুপুরে ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মামুনুল হককে।
বুধবার ঢাকা থেকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব আল্লামা খুরশিদ আলম কাশেমীকে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে এবং যুগ্ম মহাসচিব ও খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক শারাফাত হোসাইনকে কাফরুল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আর ইহতেশামুলকে গ্রেপ্তার করায় হেফাজতের শীর্ষ ১৬ নেতা গ্রেপ্তার হলেন।
চলমান গ্রেপ্তার অভিযানের মধ্যে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার আশায় ১৯ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন হেফাজত নেতারা। তাদের কয়েকজন বৈঠক সফল হয়েছে বলেও জানান।
কিন্তু বৈঠকের পর এই কয়েক দিনে আরও ছয় নেতাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
প্রথমে ১১ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে। এরপর একে একে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকা মহানগরের সভাপতি জুনায়েদ আল হাবীবসহ ১৪ জনকে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সহিংসতার মামলার পাশাপাশি ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে অবস্থানকে ঘিরে দিনভর তাণ্ডবের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের সবাইরে রিমান্ডে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বা চলছে।
এই অভিযান শুরুর আগে হেফাজত নেতারা উত্তেজক বক্তব্য দিলেও গত সোমবার ভিডিও বার্তায় এসে সংগঠনের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী কথা বলেন নরম সুরে।
‘মাননীয় সরকার’ সম্বোধন করে ওই লাইভে বাবুনগরী ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে সহিংসতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও কিছু ঘটনা ঘটেছে। এর আগ পর্যন্ত সংগঠনটি সহিংসতার দায় অস্বীকার করে আসছিল।
এর মধ্যে সমঝোতা আশোয় সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন হেফাজতের মহাসচিব নুরুল ইসলামসহ ১০ জন শীর্ষ নেতা। সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো না হলেও বৈঠকে উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রী তাদের আবেদনে ‘না’ করে দিয়েছেন।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বৈঠক করে অভিযানের কোনো ব্যত্যয় হবে না।