হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার চলছেই। এবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে ধর্মভিত্তিক সংগঠনটির আরও দুই শীর্ষস্থানীয় নেতাকে।
বুধবার ঢাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মাহবুব আলম নিউজবাংলাকে জানান, হেফাজতের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব আল্লামা খুরশিদ আলম কাশেমীকে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে এবং যুগ্ম-মহাসচিব ও খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক শারাফাত হোসাইনকে কাফরুল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ নিয়ে হেফাজতের শীর্ষ ১৪ নেতা গ্রেপ্তার হলেন।
চলমান গ্রেপ্তার অভিযানের মধ্যে সমঝোতার আশায় সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠকের পর এ নিয়ে গ্রেপ্তার হলেন চারজন।
বুধবার প্রথম প্রহরে হেফাজতের কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ আমীনকে ধরে আনা হয় মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে।
এখান থেকেই গ্রেপ্তার হন হেফাজতের আলোচিত নেতা মামুনুল হক। আতাউল্লাহ আমীন মামুনুলের রাজনৈতিক দল খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে হেফাজত ইসলামের ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি ও খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা কোরবান আলী কাসেমীকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গত ২৬ ও ২৮ মার্চ ও ৩ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের তাণ্ডবের পর তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযান শুরু হয়।
প্রথমে ১১ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে। এরপর একে একে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকা মহানগরের সভাপতি জুনায়েদ আল হাবীবসহ ১৪ জনকে।
তাদেরকে সাম্প্রতিক সহিংসতার মামলার পাশাপাশি ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে অবস্থানকে ঘিরে দিনভর তাণ্ডবের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের সবাইরে রিমান্ডে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বা চলছে।
এই অভিযান শুরুর আগে হেফাজত নেতারা উত্তেজক বক্তব্য দিলেও সোমবার ভিডিও বার্তায় এসে সংগঠনের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী কথা বলেন নরম সুরে।
‘মাননীয় সরকার’ সম্বোধন করে ওই লাইভে বাবুনগরী ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে সহিংসতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও কিছু ঘটনা ঘটেছে। এর আগ পর্যন্ত সংগঠনটি সহিংসতার দায় অস্বীকার করে আসছিল।
এর মধ্যে সমঝোতা আশোয় সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন হেফাজতের মহাসচিব নুরুল ইসলামসহ ১০ জন শীর্ষ নেতা। সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো না হলেও বৈঠকে উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রী তাদের আবেদনে ‘না’ করে দিয়েছেন।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বৈঠক করে অভিযানের কোনো ব্যত্যয় হবে না।