ভাসানচর এখন আর কোনো ইস্যু নয়, এর সমাধান হয়ে গেছে। ভাসানচর ইস্যুটি এখন ‘ডান অ্যান্ড ডাস্টেড’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সমস্যা: প্রত্যাবাসন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অতীতেও আমরা বলেছি, আমরাই প্রথম দরজা খুলে দিয়েছি; আমরা জানি কীভাবে অন্য দেশ থেকে বিতাড়িত মানুষদের মানবিক বিপর্যয় থেকে বাঁচিয়ে দেখভাল করতে হয়। আমরা সেটাই করেছি।’
‘যেখানে মিয়ানমারের অনেক প্রতিবেশী দেশই রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, সেখানে কক্সবাজার বিশ্বের সর্ববৃহৎ শরণার্থীদের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সে কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যে এটি অনুধাবন করা জরুরি যে, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদেরকে একটি স্বল্প সময়ের জন্যে আশ্রয় দিয়েছে বলেই এই সমস্যার একটি স্থায়ী ও টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে হবে ও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমরা আমাদের রিসোর্স দিয়ে রোহিঙ্গাদের মতামতের ভিত্তিতেই ভাসানচরে নিয়েছি। আন্তর্জাতিক বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিরা সম্প্রতি ভাসানচর সফর করেছেন। তারা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেননি। এমনকি কক্সবাজারের মতো ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের দেখভালের দায়িত্ব নেয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।’ জাতিসংঘের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল গত ১৭ মার্চ তিন দিনের সফরে ভাসানচরে যায়। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক প্রতিবেদনে নিজেদের ইতিবাচক অবস্থানের কথা জানায় জাতিসংঘ।
ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব ও সূচনা বক্তব্য রাখেন বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী। এতে পাঁচটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবীর, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক এম সাখাওয়াত হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার উইংয়ের মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসাইন ও বিআইআইএসএসের ঊর্ধ্বতন গবেষণা ফেলো আবু ছালেহ মো. ইউছুফ এসব প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
কক্সবাজার থেকে গত বছরের ডিসেম্বরে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়ার মাধ্যমে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। এ পর্যন্ত সাত দফায় ১৭ হাজার ৯৭১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হয়েছে।