মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ৫ মে অবরোধের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জুনায়েদ বাবুনগরী গোপন বৈঠক করেছিলেন বলে প্রকাশিত খবর প্রত্যাখ্যান করেছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটি জানিয়েছে, তাদের শীর্ষ নেতার সঙ্গে বিএনপি নেত্রীর কখনও দেখা হয়নি।
বুধবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবাদ লিপিতে এ দাবি করে হেফাজত। এতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির হাফেজ মাওলানা তাজুল ইসলাম (পীর সাহেব ফিরোজশাহ) বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনো বৈঠক তো দূরের কথা, আল্লামা বাবুনগরী সামনাসামনি কখনও দেখেননি।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি পালনের এক সপ্তাহ আগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর গোপন বৈঠকের সংবাদ ‘নির্জলা মিথ্যাচার’।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ঘিরে হেফাজতে ইসলামের নানা কর্মসূচিতে তাণ্ডব চালানোর পর তাদের ব্যাপারে নড়েচড়ে বসেছে সরকার। ধর্মভিত্তিক সংগঠনটির অনেক নেতাকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবার তাজা করা হচ্ছে আট বছর আগে শাপলা চত্বরে তাণ্ডব চালানোর মামলাগুলোও।
ওই তাণ্ডবে জড়িত থাকার অভিযোগ সম্প্রতি গেপ্তার করা হয় ঢাকা মহানগর কমিটির সাবেক প্রচার সম্পাদক মুফতি ফখরুল ইসলামকে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
সংবাদমাধ্যমে খবর, রিমান্ডে ফখরুল বলেছেন শাপলা চত্বরে সমাবেশের এক সপ্তাহ আগে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন হেফাজতের শীর্ষ নেতা বাবুনগরী।
প্রতিবাদলিপিতে তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘হেফাজতের শীর্ষ নেতৃত্বকে কলঙ্কিত করতে মুফতি ফখরুল ইসলামের কাছ থেকে পুলিশ মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করেছে। এই স্বীকারোক্তি একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় শীর্ষ আলেমের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়। দেশবাসী এমন মিথ্যা স্বীকারোক্তি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
‘হেফাজত আমিরের (বাবুনগরী) কাছ থেকে আমি জেনেছি, ২০১৩ সালে যখন তাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়া হয়, তখনও পুলিশ তাকে বেগম জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন কি না, জানতে চেয়েছিল। রিমান্ডেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, বৈঠক তো দূরের কথা, খালেদা জিয়াকে সামনাসামনি তিনি কখনই দেখেননি।’
তাজুল ইসলাম অভিযোগ, ইবাদত-বন্দেগির মাসে হেফাজতের নেতা-কর্মী ও ওলামায়ে কেরামের ওপর পুরোনো মিথ্যা মামলা সচল করে দমনপীড়ন চালানো হচ্ছে। গুটি কয়েক নীতি-আদর্শচ্যুত সাবেক নেতাকে এতে দাবার গুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকার ও প্রশাসনের প্রতি ওলামায়ে কেরামের ওপর দমনপীড়ন ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা এবং অপবাদ আরোপ বন্ধের দাবি জানান মাওলানা তাজুল।