রমজান মাসে হেফাজত নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে সরকার নিজেদের পতন ডেকে আনছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে মামুনুল হকের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
হেফাজত ও খেলাফতের যুগ্ম মহাসচিবকে গ্রেপ্তার করে সাত দিনের রিমান্ডে নেয়ার দিন সোমবার দলের এক বৈঠকে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
এতে বলা হয়, ‘হামলা মামলা ও গ্রেপ্তারর করে সরকার নিজের পতন ডেকে আনছে। হামলা মামলা হয়রানি ও গ্রেপ্তার বন্ধ করুন। রিমান্ডে অমানবিক আচরণ আল্লাহ সহ্য করবেন না।’
গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির ইউসুফ আশরাফ বলেছেন, ‘পবিত্র রমজান মাসে আলেম-উলামা ও ইসলামী নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করে মানুষের মাঝে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। সরকার জনগণের প্রতিবাদকে ভয় পায় বলে লকডাউনের মধ্যে আলেম-উলামা ও ইসলামী নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার করে লকডাউনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।’
হেফাজতে ইসলাম নিজেদেরকে অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে পরিচয় দিলেও এর সিংহভাগ নেতারই রাজনৈতিক পরিচয় আছে। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য আর এসব দলেল বেশিরভাগ বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক ২০ দলীয় জোটের শরিক।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ভারতের সরকারপ্রধান নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানোর প্রতিবাদে গত ২৬ ও ২৮ মার্চ দেশের নানাস্থানে তাণ্ডব চালায় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণাকে নিয়ে অবরুদ্ধ মামুনুল হককে উদ্ধার করতে যাওয়া নেতা-কর্মীরাও তৈরি করে ত্রাস।
সেই রিসোর্ট ছাড়াও সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের কার্যালয়, স্থানীয় ছাত্র ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর, মহাসড়কের যানবাহনে বেপরোয়া আক্রমণ চালিয়েছে তারা। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান আর সুনামগঞ্জের ছাতকেও উসকানি ছাড়াই হামলা হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের কার্যালয়ে।
হঠাৎ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠা সংগঠনটিকে এরপর কঠোর বার্তা দেয় সরকার। একে একে গ্রেপ্তার করা হয় ১০ জন শীর্ষ নেতাকে। যার সব শেষ সংযোজন মামুনুল হক যিনি হেফাজতের চতুর্থ সারির নেতা হলেও গত কয়েক বছর উত্তেজক বক্তব্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন।
হেফাজতের ১০ জন নেতাকেই পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে অথবা করছে।
খেলাফত মজলিস অভিযোগ করেছে, রিমান্ডের নামে আলেম-উলামাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে।
দলের দুই যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ও জালালুদ্দীনসহ আটক সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অন্যথায় আলেম-উলামারা ঐক্যবদ্ধভাবে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।’