গ্রেপ্তার হওয়া হেফাজত নেতা মামুনুল হকের কর্মকাণ্ড দেশ, সমাজ ও ধর্মের জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বলেছেন, হেফাজতের এই নেতা ব্যঙ্গ করেছেন মহানবী হযরত মোহাম্মদ (স.) কেও।
রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে সোমবার দুপুরে সীমিত পরিসরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘মামুনুল হক সাম্প্রতিক সময়ে যেসব কর্মকাণ্ড করেছে এবং ২০১৩ সালে হেফাজতের তাণ্ডবে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে, সেগুলো দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র এবং ইসলামের জন্য হুমকিস্বরূপ।’
মামুনুল মহানবীকে ব্যঙ্গ করেছেন জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মহানবী হযরত (সা.) কীভাবে ঠোঁট নাড়াতেন সেটিও মামুনুল হক অভিনয় করে দেখিয়েছে অর্থাৎ রাসুল (সা.)-কে ব্যঙ্গ করেছে। এ অধিকার তাকে কে দিয়েছে! এটা যদি অন্য কেউ করতো, তাকে মামুনুল হক আর তার বশংবদ হেফাজতের নেতারা কী করতেন।’
কয়েকজন মতলববাজ হুজুরের কাছে ইসলাম ধর্ম লিজ দেয়া হয়নি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমীর মাওলানা আহমদ শফির মতো শতবর্ষী নেতাকে অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেবার পথে তার অক্সিজেন টিউব খুলে নেয়াসহ নানাভাবে হেনস্তা করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া, যেগুলোকে ডাক্তারেরা তার মৃত্যুর কারণ বলেছেন- এ সমস্ত কিছুর নির্দেশদাতা হচ্ছে মামুনুল হকরা।’
মুখ ফসকে সত্য বলেছেন আব্বাস
মুক ফসকে সত্য বলার পর দলের চাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস নিজের দেয়া বক্তব্য অস্বীকার করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
ইলিয়াস আলিকে সরকার নয় বিএনপিই গুম করেছে- বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের এমন মন্তব্যের পর তা আবার অস্বীকার করা নিয়ে জানতে চাওয়া হয় হাছান মাহমুদের কাছে।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মির্জা আব্বাস অনলাইনে লাইভ মিটিংয়ে মুখ ফসকে সত্যিটা বলে ফেলেছেন। পরে দলের মধ্যে সমালোচনার মুখে তিনি সেই বক্তব্যের দায় গণমাধ্যমের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছেন। তবে সত্যিটা বলার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই এবং আশা করি তিনি ভবিষ্যতে আরও এমন সত্যি বলে দেবেন।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদলকডাউন চলাকালে পুলিশের হাতে চিকিৎসক ও অন্যান্য পেশাজীবী মানুষের হেনস্তার ঘটনা নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘লকডাউন কার্যকর করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে যত্ন ও কষ্ট করছে, এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি দায়িত্বপালনের সময় এটি খেয়াল রাখতে হবে, কেউ যেন হেনস্তা না হয়।’
চিকিৎসক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মীসহ অনেকে দেশে করোনা মোকাবিলায় প্রথম সারির যোদ্ধা এবং আমাদের অনেক রাজনৈতিক নেতা এসময় জনগণের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘একজন ডাক্তার যিনি অ্যাপ্রোন পরে আছেন, যার গাড়িতে দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের স্টিকার আছে, তাকে পরিচয়পত্রের জন্য বারবার চাপ দেয়া কতটা সমীচীন সে প্রশ্ন অনেকেই তুলেছেন।’