গাজীপুরের শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে কাউন্সিলর পুত্রের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন এক পুলিশ দম্পতি।
রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত সিফাত আহমেদ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহমেদের ছেলে।
লাঞ্ছিত পুলিশ সদস্য গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানার কনস্টেবল মোহাম্মদ রিপন।
ঘটনার পর পুলিশ সিফাত আহমেদকে আটক করে টঙ্গী পূর্ব থানায় নিয়ে যায়। পরে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে থানা থেকে কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ ছেলেকে ছাড়িয়ে নেন।
পুলিশ জানায়, অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন পুলিশ কনস্টেবল রিপন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হাসপাতালের তৃতীয় তলার বারান্দায় প্রতিবেদনের জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন ওই দম্পতি।
পাশেই চলছিল কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম। সেখানে জুতা খুলে প্রবেশ নিয়ে হাসপাতালের এক পরিচ্ছন্নকর্মীর সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয় পুলিশ দম্পতির।
এ সময় রেড ক্রিসেন্টের কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কর্মরত কাউন্সিলরের শ্যালিকা সাদিয়া সুলতানার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় পুলিশ দম্পতির।
এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহমেদের স্ত্রী শিউলি বেগম, কাউন্সিলর পুত্র সিফাত আহমেদ ও শ্যালিকা সাদিয়া সুলতানা। পুলিশ কনস্টেবল রিপনের গেঞ্জি টেনে ছিঁড়ে ফেলেন সিফাত।
বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক উভয়পক্ষকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
পরে টঙ্গী পূর্ব থানার উপপরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন যান ঘটনাস্থলে। তিনি সিফাতকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
হাতাহাতির সময় পুলিশ সদস্যের গেঞ্জি ছিঁড়ে ফেলা হয়
পুলিশ কনস্টেবল রিপন বলেন, ‘জুতা খুলে প্রবেশ না করায় আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকলে আমি আমার পরিচয় দেই। পরিচয় পাওয়ার পরও আমাদেরকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।’
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘তর্কবিতর্কের জেরে পুলিশ সদস্যের সঙ্গে রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসবক কাউন্সিলরপুত্রের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থানায় বিষয়টি সমাধান করেছেন বলে শুনেছি।’
জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমার ছেলে রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা পুলিশ দম্পতির সঙ্গে একটি ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে। পরে বিষয়টি সমাধান হয়েছে।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) ইলতুৎ মিশ বলেন, ‘পুলিশ সদস্যের লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝি থেকে সামান্য বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে।’