বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নতুন ধরনের করোনায় দীর্ঘ ভোগান্তি

  •    
  • ১৭ এপ্রিল, ২০২১ ২১:৪২

‌'করোনা আক্রান্তের ১৪ পর রোগীর এমনিতেই ভালো হয়ে যাওয়ার কথা। তবে নতুন ধরনের করোনার ক্ষেত্রে এটা হচ্ছে না। সুস্থ হতে সময় লাগছে। অনেক সময় মানসিক স্বাস্থ্য ও স্মৃতিশক্তিতে প্রভাব পড়ছে। অনেকের প্রচণ্ড মাথাব্যথা হচ্ছে।  নিউরোসাইক্রিয়াটিক সমস্যা, যেমন কারও কারও মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীনতার প্রবণতা কিংবা ব্রেইন ইনফেকশনের মতো উপসর্গও দেখা যাচ্ছে।’

দেশে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ধরন (ভ্যারিয়েন্ট) দায়ী বলে প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।

গবেষণা কেন্দ্রটি বলছে, গত ১৮ থেকে ২৪ মার্চের মধ্যে গবেষকেরা ৫৭টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে ৪৬টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনের উপস্থিতি পেয়েছেন, যা ৮১ শতাংশ।

দক্ষিণ আফ্রিকার এই ধরন ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রমণশীল। নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণেই দেশে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়েছে। গত ১৫ দিনের এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে করোনা আক্রান্তের ধরন পরিবর্তনের ফলে চিকিৎসা পদ্ধতিতেও পরিবর্তন এসেছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইউকে ভ্যারিয়েন্টে তরুণরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এদের দ্রুত অক্সিজেন ও আইসিইউ প্রয়োজন হচ্ছে। অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে। চিকিৎসা নেয়ার সময়ও দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে সেবা দিচ্ছেন চিকিৎসক নাজমুল ইসলাম।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার প্রথম ঢেউ থেকে দ্বিতীয় ঢেউ অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। বিশেষ করে, নতুন ধরনের করোনায় তরুণরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। রোগীদের অবস্থা হঠাৎ করে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় তাদের অক্সিজেন দেয়ার প্রয়োজন হচ্ছে। সাধারণ করোনার মতো ফুসফুস আক্রান্ত হচ্ছে।’

‘আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, করোনা আক্রান্তের ১৪ পর রোগীর এমনিতেই ভালো হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও নতুন ধরনের করোনার ক্ষেত্রে এটা হচ্ছে না। সুস্থ হতে সময় লাগছে। অনেক সময় মানসিক ও স্মৃতিশক্তিতে প্রভাব পড়ছে। অনেকের প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হচ্ছে। নিউরোসাইক্রিয়াটিক সমস্যা, যেমন কারও কারও মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীনতার প্রবণতা কিংবা ব্রেইন ইনফেকশনের মতো উপসর্গও দেখা যাচ্ছে।’

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের অধ্যাপক ও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) প্রধান মোজাফফর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক মাস আগেও আইসিইউতে রোগীর চাপ অনেক কম ছিল। এখন যারা আক্রান্ত হচেছ তাদের অধিকাংশেরই আইসিইউ লাগছে।

‌‘আগে বাড়িতে চিকিৎসা নিয়েই অধিকাংশ রোগী ভালো হয়ে যেতেন। এখন করোনা আক্রান্ত হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে আইসিইউ প্রয়োজন হচ্ছে। আগে ৬ থেকে ৭দিন আইসিইউকে থাকলে রোগী সুস্থ হয়ে যেতেন, তাদের কেবিনে রাখা যেত। এখন এটা আর সম্ভব হচ্ছে না। নতুন ধরনের করোনা মানুষকে অনেক বেশি ভোগাচ্ছে।

‘স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে অনেক সময় লাগছে। নতুন ধরনের করোনা মূলত ফুসফুসে দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে। নতুন ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্তদের মধ্যে নানা নতুন বৈশিষ্ট্য দেখতে পাচ্ছেন চিকিৎসকরা।’

নতুন ভ্যারিয়েন্ট যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত করছে

মুগদা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ আহমেদুল কবীর বলেন, ‘এবার সর্বোচ্চ মৃত্যু ঘটছে ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে। হঠাৎ করেই আক্রান্তদের তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকের অন্য জটিল রোগও ছিল। করোনায় প্রধানত ফুসফুস সংক্রমিত হয়। তার পরই এই ভাইরাস হৃদযন্ত্রকে আক্রান্ত করে এবং পর্যায়ক্রমে অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধরে ফেলে। আগে করোনা রোগীকে এক সপ্তাহের বেশি আইসিইউতে রাখতে হতো না। এখন হচ্ছে। আগের চেয়ে বেশি অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। রক্তের অনুচক্রিকার সঙ্গে হিমোগ্লোবিনও কমে যাচ্ছে।’

করণীয় কী

করোনা আক্রান্ত হলে প্রথমে বাড়িতে চিকিৎসা নিতে হবে। অক্সিজেন লেভেল মাপার জন্য বাড়িতে একটি অক্সিমিটার রেখে দিতে হবে। শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিতে হবে। মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অসীম কুমার অবশ্য প্রাথমিক স্বাস্থ্য রক্ষার কথাই আবার মনে করিয়ে দিলেন, ‘করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। সাবান পানি দিয়ে ৩০ মিনিট পর পর হাত ধুতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর