‘বাংলাদেশের গরিব মানুষ এখনও খেতে পাচ্ছে না বলে সুযোগ পেলেই ভারতে চলে আসছে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন বিজেপির সাবেক সভাপতি ও ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার এই মন্তব্যের কড়া জবাব দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার রাতে তিনি ঢাকার গণমাধ্যমকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় জানান, বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণাই নেই অমিত শাহের।
মোমেন বলেন, ‘ভারতের লোকদের ৫০ শতাংশের ভালো কোনো বাথরুম নেই। আর আমাদের ৯০ শতাংশ লোকই ভালো বাথরুম ব্যবহার করেন। আমাদের দেশের শিক্ষিত লোকের চাকরির অভাব আছে। তবে অল্পশিক্ষিত লোকের চাকরির অভাব নেই।
‘আর ভারতের লক্ষাধিক লোক বাংলাদেশে চাকরি করে। তাই আমাদের ভারতে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।’
মোমেন বলেন, ‘পৃথিবীতে অনেক জ্ঞানী লোক আছেন, দেখেও দেখেন না, জেনেও জানেন না। তবে তিনি (অমিত শাহ) যদি সেটা বলে থাকেন, আমি বলব, বাংলাদেশ নিয়ে তার জ্ঞান সীমিত। বরং ক্ষেত্রবিশেষে বাংলাদেশ তাদের দেশ ভারত থেকে অনেক এগিয়ে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যদি এ ধরনের চিন্তা করে থাকেন, তাহলে আমি বলব, তাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হবে। আর তাদের মনে হয় আমরা সঠিক তথ্য জানাতে পারিনি। এটা আমাদের দীনতা। তাদের সঠিক তথ্য জানাতে আমরা সচেষ্ট থাকব।’
মঙ্গলবার ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিজেপির সাবেক সভাপতি ও ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের গরিব মানুষ এখনও খেতে পায় না, তাই ভারতে আসে। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ বন্ধ করা হবে।’
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে সরকার গড়তে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। সেই চেষ্টার অগ্রভাগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অমিত শাহ। বিজেপির দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসকে হটিয়ে পশ্চিমবঙ্গে দুই শর বেশি আসন পেয়ে সরকার গড়বে তারা।
গত ১০-১৫ বছরে বাংলাদেশের তো আর্থিক উন্নয়ন হয়েছে, তবু কেন লোকে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ করছে? – আনন্দবাজার-এর এমন প্রশ্নে অমিত শাহ বলেন, ‘এর দুটো কারণ আছে। এক, বাংলাদেশের উন্নয়ন সীমান্ত এলাকার নিচুতলায় পৌঁছায়নি। যেকোনো পিছিয়ে পড়া দেশে উন্নয়ন হতে শুরু করলে সেটা প্রথমে কেন্দ্রে হয়। আর তার সুফল প্রথমে বড়লোকদের কাছে পৌঁছায়, গরিবদের কাছে নয়। এখন বাংলাদেশে সেই প্রক্রিয়া চলছে। ফলে গরিব মানুষ এখনও খেতে পাচ্ছে না। সে কারণেই অনুপ্রবেশ চলছে। আর যারা অনুপ্রবেশকারী, তারা যে শুধু বাংলাতেই থাকছে, তা নয়। তারা তো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। জম্মু-কাশ্মীর পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে।’
অমিত শাহের মতে, দ্বিতীয় কারণটি হলো প্রশাসনিক সমস্যা। তিনি বলেন, প্রশাসনিকভাবেই এর মোকাবিলা করতে হবে। সেটা পশ্চিমবঙ্গের সরকার করেনি।