করোনাভাইরাস মহামারি রোধে চলাচলের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও বিদেশগামী কর্মীদের জন্য ফ্লাইট বন্ধ না করার দাবি জানিয়েছে জনশক্তি রপ্তানি কারকদের সংগঠন বায়রা।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
এতে বিদেশগামী কর্মীদের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ না করে এই খাতকে জরুরি সেবা হিসেবে বিবেচনায় আনতে বলা হয় সংবাদ সম্মেলনে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিধিনিষেধের বাইরে রেখে জনশক্তি রপ্তানি খাতকে চালু রাখারও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাবেক অর্থ সচিব ফখরুল ইসলাম। বলেন, ‘দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এই মুহূর্তে প্রায় ২০-৩০ হাজার কর্মী অধিক মূল্যে বিমান টিকিট সংগ্রহ করেছে…হঠাৎ ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায় সবাই উৎকণ্ঠা ও হতাশায় নিমজ্জিত।
‘বিজিএমইএ করোনা মহামারিতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কল-কারখানা চালু রাখতে পারলে জনশক্তি রপ্তানির খাতকেও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসহ সকল কার্যক্রম চালু রাখার সুযোগ দেয়া উচিত।’
ফখরুল ইসলাম জানান, এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সকল ফ্লাইট বন্ধ করা হলে মারাত্মক ক্ষতি হবে বিদেশগামী কর্মী ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ। হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হলে কাতার এবং ওমানের হাজার হাজার যাত্রী লাখ লাখ টাকা দিয়ে কোয়ারেন্টাইন হোটেল বুকিং করে রেখেছে, যেগুলো নন রিফান্ডেবল। এতে তাদের বড় অংকের লোকসান গুনতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এর আগে লকডাউনে হাজার হাজার প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের অনেকেই আবার নতুন করে বিদেশ গমনের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শুধুমাত্র ফ্লাইটের অপেক্ষায় আছে। তারা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
বায়রা থেকে জানানো হয়, লকডাউনের এই সাতদিনে প্রায় ২০,০০০ শ্রমিক সৌদি, দুবাই, ওমান, কাতার যাওয়ার জন্য বিমান টিকিট করেছেন। যার প্রতিটি টিকেট উচ্চমূল্যে (৮০-৯০ হাজার টাকা) ক্রয় করে ফ্লাইটের অপেক্ষায় আছে।
‘সবকিছু বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে বিদেশগামী কর্মী প্রেরণের নিমিত্তে আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু রাখা উচিত। অন্যথায় বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানি খাতসহ সংশ্লিষ্ট সকল খাত শতভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে’-বলেন ফখরুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, নেপাল, ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপাইনসহ জনশক্তি রপ্তানিকারী দেশগুলো লকডাউনের মধ্যেও জরুরি খাত হিসেবে বিভিন্ন দেশে কর্মী প্রেরণ করছে। সেখানে বাংলাদেশ থেকে কর্মী প্রেরণ করা বন্ধ হলে বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে যাবে।
জানানো হয়, অনেক কর্মীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে, আবার অনেক কর্মীর ভিসার মেয়াদ দ্বিতীয়বার শেষ হবে। সময়মতো না যেতে পারলে নিয়োগকর্তা চাহিদাপত্র বাতিল করতে পারে।
পরিস্থিতি যাই হোক, যতদিন পর্যন্ত কর্মী গ্রহণকারী দেশগুলো, বিশেষকরে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করবে অন্তত ততদিন দেশের স্বার্থে বিদেশগামী কর্মীদের লকডাউনের আওতার বাইরে রেখে বিদেশ গমনে সুযোগ করে দেয়ার জানায় বায়রা।