৫৭ বছর পর ঢাকা জিপিওর পোস্ট বক্স আধুনিক করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পোস্ট বক্সের সেবার মান বাড়াতে করা হচ্ছে ডিজিটাল।এর ফলে জরুরি চিঠি ও গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট জিপিওর পোস্ট বক্সে পাঠালে তা দ্রুত গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠানো হবে। চলতি বছরের শুরু থেকে জিপিও কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কাজ শুরু করেছে।ঢাকা জিপিওর সিনিয়র পোস্ট মাস্টার খন্দকার শাহনূর সাব্বির নিউজবাংলাকে জানান, ঢাকায় বসবাসকারীদের চিঠি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জরুরি কাগজপত্র দ্রুত নিরাপদে পৌঁছাতে ১৯৬৩ সালের মার্চে ঢাকা জিপিওতে ৪ হাজার ৫শ পোস্ট বক্স চালু করা হয়। প্রতিটি বক্সের নির্দিষ্ট নম্বর রয়েছে। এসব বক্সের প্রতিটির বার্ষিক ভাড়া তিন শ টাকা।শাহনূর সাব্বির জানান, প্রথম দিকে ঢাকা শহরে এই পোস্ট বক্সের ব্যাপক চাহিদা ছিল। এ কারণে জিপিওর পশ্চিম পাশের মূল ভবনের নিচতলায় পোস্ট বক্সের জায়গা বাড়ানো হয়। তবে গত দুই দশকে মোবাইল, টেলিফোন, ই-মেইলসহ আধুনিক প্রযুক্তির কারণে পোস্ট বক্সের চাহিদা কমতে থাকে।জিপিওর পোস্ট বক্স শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (বক্স অপারেটর) কবির হোসেন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দিনের পর দিন ব্যবহার না করায় অনেক বক্স খালি রয়েছে। ঢাকা জিপিওতে বর্তমানে ৩ হাজার ৩০৬টি পোস্ট বক্স আছে। এর মধ্যে ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চালু ছিল ৬৫০টি। ’তিনি জানান, পোস্ট বক্সগুলো বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে। সেগুলোতে এখনও চিঠি ও ডক্যুমেন্ট আসে।পোস্ট বক্সের সুবিধা হলো, এগুলো ভাড়া নেয়া ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নম্বর অনুযায়ী তাদের কাছে আসা চিঠি বক্সে জমা হয়। পরে যে কোনো সময় চাবি দিয়ে তালা খুলে এসব চিঠি সংগ্রহ করা যায়।জিপিও কর্মকর্তারা বলেন, পোস্ট বক্স নগর জীবনে অনেকের জন্য নিরাপদ। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ইচ্ছা করলেই ঢাকা জিপিও থেকে একটি বক্স ভাড়া নিয়ে এর নম্বর ব্যবহার করতে পারেন। বক্সের মালিক অফিস চলাকালিন বক্স খুলে তার কাগজ বা চিঠি নিয়ে যেতে পারেন। এ জন্য বছরে ফি দিতে হয় তিন শ টাকা।
ঢাকা জিপিও ছাড়াও সদরঘাট, নিউমার্কেট, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গুলশান ও বনানীসহ বিভিন্ন পোস্ট অফিসে এক সময় সীমিত আকারে পোস্ট বক্স নম্বর চালু করা হয়। তবে ব্যবহার কমে যাওয়ায় এখন সেগুলো নেই বললেই চলে।
সরেজমিন দেখা গেছে, পোস্ট বক্সগুলো জিপিও প্রধান কার্যালয়ে সারিবদ্ধভাবে পড়ে আছে। সেখানে জমেছে ধুলাবালি। অল্প কিছু বক্সে তালা ঝুলছে।একজন পোস্ট মাস্টার জানান, এতদিন পোস্ট বক্সের ওই শাখা অবহেলায় পড়ে ছিল। এখন তা আবার নতুন ভাবে সাজানো হবে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ই-মেইল, মেসেজ ও মোবাইল ফোনের যুগেও ডাক বিভাগের পোস্ট বক্সের চাহিদা শেষ হয়নি। কিছু ডক্যুমেন্টের জন্য পোস্ট বক্স এখনও নির্ভরযোগ্য ও কার্যকর। তবে সঠিক বিপণন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রাইভেট সেক্টরের (কুরিয়ার সার্ভিস) মতো দ্রুত সেবা দিতে পারলে সরকারি এ প্রতিষ্ঠান জনগণের আস্থা ফিরে পাবে। এ জন্য প্রচারও চালাতে হবে।’