বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

  •    
  • ১২ এপ্রিল, ২০২১ ১৩:৪৪

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশনে আগামী দিনের নতুন সংকটগুলো মোকাবিলায় শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি প্রস্তুত করা এখন সময়ের দাবি। আশা করি এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

জাতিসংঘ শান্তিমিশনে অংশ নেয়া শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিতে সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল সেনানিবাসে বহুজাতিক সেনা অনুশীলন শান্তির অগ্রসেনার সমাপনী দিন সোমবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এই তাগিদ দেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্বশান্তি নিশ্চিত করা অতীতের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনাভাইরাসের মতো একটা অদৃশ্যশত্রুর আবির্ভাব, প্রযুক্তির দ্রুত প্রসার এবং সময়ের অগ্রযাত্রার সাথে সাথে নতুন নতুন হুমকির উপাদানও সৃষ্টি হয়েছে।

‘বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক ও জটিল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সম্প্রতি শান্তিরক্ষীদের প্রাণহানির সংখ্যাও উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।’

এ যাবৎ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের মধ্যে ১৫৮ জন প্রাণ উৎসর্গ করেছেন ও ২৩৭ জন আহত হয়েছেন।

এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশনে আগামী দিনের নতুন সংকটগুলো মোকাবিলায় শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি প্রস্তুত করা এখন সময়ের দাবি। আশা করি এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

বহুজাতিক সেনা অনুশীলন শান্তির অগ্রসেনায় অংশ নেয় বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও ভারতের ১২৩ জন সেনাসদস্য।

সমাপনী দিনে প্রশিক্ষণ নেয়া প্রত্যেকের হাতে তুলে দেয়া হয় প্রশিক্ষণ সমাপনী সনদ। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সনদ তুলে দেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তি মিশনে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৮০০ নারী শান্তিরক্ষীসহ এক লাখ ৭৫ হাজারের অধিক বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী পাঁচটি মহাদেশে ৪০টি দেশের ৫৪টি মিশনে অংশগ্রহণ করছে। বর্তমানে ৬০ হাজারের অধিক বাংলাদেশি সেনা ও পুলিশ সদস্য ১০টি মিশনে শান্তিরক্ষার উদ্দেশ্যে মোতায়েন আছে।

‘আমাদের শান্তিরক্ষীগণ যে মিশনেই গেছেন সেখানেই জাতিসংঘের পতাকাকে সমুজ্জ্বল ও উজ্জ্বল রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করেছেন। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অনেক সামাজিক কাজ তারা করেছেন। এ কারণেই আজ বাংলাদেশ সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে পরিণত হয়েছে।’

বহুজাতিক সেনা অনুশীলন শান্তির অগ্রসেনায় সশরীরে উপস্থিত হতে না পারায় দুঃখও প্রকাশ করেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার আদর্শেই চলছি। পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশকে আদর্শ বিচ্যুত করা হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি আদর্শ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। মাত্র সাড়ে ৩ বছর সময় তিনি পেয়েছিলেন।

‘এ সময়ের মধ্যেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে তিনি গড়ে তুলেছিলেন। আমাদের দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা শেখ মুজিবকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় শান্তিতে বিশ্বাস করতেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে আমাদের যে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছিলেন যে, সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়। আর সেই চিন্তা ভাবনা থেকেই আমরা এই রাষ্ট্র পরিচালনা করে যাচ্ছি।

‘যেকোনো দেশের জাতীয় মর্যাদা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য যথাযথভাবে প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী অপরিহার্য। তেমনি সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সক্ষমতা যাচাইয়ে অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যখন আমরা জাতির পিতাকে হারিয়েছি, এরপর বাংলাদেশ যে আদর্শ নিয়ে স্বাধীন হয়েছিল, সে আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়।

‘আমরা যখন সরকার গঠন করি, তখন থেকেই আমাদের একটা প্রচেষ্টা ছিল। পিতার আদর্শ নিয়েই দেশে ফিরে দেশ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাই। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আমি তারই আদর্শ নিয়ে পথ চলি।’

সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে প্রশিক্ষণে জোর সামরিক বাহিনীকে আধুনিকায়নের পাশাপাশি উন্নত প্রশিক্ষণেও জোর দেয়া হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘২১ বছর পর…বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আমাদের সামরিক বাহিনীকে আধুনিকায়ন করার পাশাপাশি প্রশিক্ষণে আমি জোর দেই।

‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি) প্রতিষ্ঠা করি। এ প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা, কৌশল ও উন্নয়ন বিষয়ে সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের উচ্চতর প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি হয়।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০০৯ সালে পুনরায় যখন সরকার গঠন করি অত্যন্ত পেশাদার প্রশিক্ষিত সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে আমরা ফোর্সেস গোল ২০৩০ শীর্ষক পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু আমাদের প্রতিরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করেন। তারই ভিত্তিতে ফোর্সেস গোল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

‘গত ১২ বছরে আমাদের তিন বাহিনীর আধুনিকায়নে আমরা যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছি। আমরা আমাদের সামরিক বাহিনীতে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র সংযোজন করেছি। সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ নিরসনে আমরা শূন্য সহনশীলতা নীতি অর্থাৎ জিরো টলারেন্স গ্রহণ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘মহামারির সময়েও বিশেষ করে করোনাভাইরাস যখন সমগ্র বিশ্বের অর্থনীতিকে স্থবির করে দিয়েছে তখনও আমরা গতিশীল রাখার প্রচেষ্টা চালিয়েছি।

‘আমাদের প্রবৃদ্ধি আমরা ৫ দশমিক ৪ শতাংশে অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি।’

এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গান্ধী পুরস্কার প্রদান করায় ভারতের সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অভিনন্দন বার্তা পাঠানোয় ১১৬টি দেশের নেতাদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর