কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ১১ বছরের মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকারের মামলায় কুলিয়ারচর পৌর এলাকার বড়খারচর নূরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার মোহতামিম (প্রধান শিক্ষক) মাওলানা ইয়াকুব আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ইয়াকুব আলীর বাড়ি কুলিয়ারচর উপজেলার উসমানপুর এলাকায়। তিনি কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
রোববার তাড়াইল উপজেলার সেকান্দরনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তারের এলাকাটি ৫০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে।
গত ১ এপ্রিল রাতে ওই শিশুকে নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে বলাৎকার করেন বলে মামলায় অভিযোগ করেছে শিশুটির পরিবার।
শিশুটি জানায়, বলাৎকারের বিষয়টি কাউকে না বলতে কোরআন ছুঁইয়ে তাকে শপথ করানো হয়। এ কারণে কাউকে না বলে শিশুটি পরের দিন বাড়ি চলে যায়।
এরপর পরিবারের লোকজন তাকে মাদ্রাসায় পাঠাতে চাইলে সে যেতে চায়নি। আর এ জন্য পরিবারের লোকজন তাকে মারধরও করে। এক পর্যায়ে সে তার মায়ের সাথে যাবে বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে থানায় যেতে চায় বলে মাকে জানায়।
মা ভেবেছিলেন বাড়িতে মারধর করার কারণে ছেলে থানায় যেতে চাইছে। তাই মা তাকে বুঝিয়ে থানার সামনে থেকে নিয়ে আসেন।
পরে ওই ছাত্র জানায় সে মাদ্রাসার সভাপতি আবদুস ছাত্তারের কাছে যেতে চায়। সেখানে গিয়ে মায়ের উপস্থিতিতে বলাৎকারের কথা খুলে বলে।
মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুস সাত্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই ছাত্র তার মাকে নিয়ে এসে আমার কাছে পুরো ঘটনা খুলে বলেছে। আমি আমাদের কমিটির সকল সদস্যদের নিয়ে মিটিং করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
ওই মাদ্রাসায় প্রায় ৩০০ জন ছাত্র পড়াশুনা করে। আর আসামি ইয়াকুব আলী বিবাহিত। তার একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে।
৭ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ঐ ছেলের বাবা কুলিয়ারচর থানায় ইয়াকুব আলীকে আসামি করে মামলা করেন।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সুলতান মাহমুদ নিউজবাংলাকে জানান, ‘তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় ৪৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
কওমি শিক্ষককে বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হলে তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানো হয়।
স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে ওসি আরও জানান, আসামি মাওলানা ইয়াকুব আলী হেফাজত নেতা। তবে তার পদবী তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।