অরাষ্ট্রীয় শক্তির উত্থান, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, রাজনৈতিক সংকট এবং পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত অবস্থানের কারণে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশন ক্রমশই চ্যালেঞ্জিং এবং জটিল হয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শান্তিরক্ষীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, কমিউনিটি-বেজড ইনফরমেশন শেয়ারিং, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, জাতিসংঘ সনদের পরিমার্জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো তৈরির ওপর জোর দেন তিনি ।
বোরবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আয়োজনে ঢাকা সেনানিবাসে মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আয়োজিত ‘আর্মি চিফস কনক্লেভ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন সেনাপ্রধান। দেশি ও বিদেশি সামরিক-বেসরামরিক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নারাভানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের বর্তমান চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে তা মোকাবিলায় অংশীদারত্বের ভিত্তিতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, জাতিসংঘের মতবাদের নমনীয়তা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, যথাযথ লজিস্টিক সহায়তা নিশ্চিত করা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাজেট বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, উন্নত প্রযুক্তি ও অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিরূপ প্রয়োগ এবং চলমান বৈশ্বিক মহামারির কারণে শান্তিরক্ষার প্রকৃতি রূপান্তরিত হয়েছে। এই নজিরবিহীন বৈশ্বিক মহামারির ফলে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অর্থবহ পারস্পরিক সহযোগিতা, নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জরুরি অবস্থার উন্নয়ন অতীব প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারী উপস্থিত অতিথিরা আগামী দিনগুলোতে বিশ্বে বিভিন্ন সংঘর্ষ মোকাবিলায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অন্যতম প্রধান সহযোগী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক আয়োজিত এই সেমিনার ভবিষ্যতে বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলে সকলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ভুটান সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অপারেশন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দরজি রিনচেন, ফোর্স কমান্ডার ইউনাইটেড নেশন মাল্টি ডাইমেনশনাল ইন্টিগ্রেটেড স্ট্যাবিলাইজেশন মিশন ইন মালির লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডেনিস জিলেনসপোরে এবং ফোর্স কমান্ডার ইউনাইটেড নেশনস মাল্টি ডাইমেনশনাল ইন্টিগ্রেটেড স্ট্যাবিলাইজেশন মিশন ইন দ্য সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিজিয়ন লেফটেন্যান্ট জেনারেল সিদকি ড্যানিয়েল ত্রাওর।