সাত বছরের শিশু জয়নবার জন্ম লেবাননে। মা ডলি বেগম বাংলাদেশি। দীর্ঘদিন গৃহকর্মীর কাজ করেন লেবাননে।
ডলি বেগম গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে লেবাননেই মারা যান। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে ছোট্ট জয়নবার ঠাঁই হয়েছে ঢাকার একটি বস্তিতে।
শিশুটির বাবা পাকিস্তানি। কোথায় আছেন তা জানা যায়নি।
যেভাবে জয়নবা বাংলাদেশে
ডলি বেগমের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস মরদেহ ও শিশুটিকে উদ্ধার করে। এরপর তারা ডলির পরিবারের সন্ধানে সহায়তা চায় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও ব্র্যাকের কাছে। পরিবারকে খুঁজে পাওয়ার পর ডলির স্থানীয় দাফন ও জয়নবাকে দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
মাঝের সময়টি জয়নবাকে লালনপালনের জন্য লেবাননের এক বাংলাদেশি নারীর কাছে দেয়া হয়। এর কিছুদিন পরই শিশুটিকে রাখতে অপারগতা প্রকাশ করেন ওই নারী। জয়নবাকে পাঠানো হয় লেবানন ডিপোর্টেশন ক্যাম্পে। চলতি বছরের ১৯ মার্চ ট্রাভেল পাস দিয়ে এক বাংলাদেশির সঙ্গে জয়নবাকে দেশে পাঠায় দূতাবাস।
জয়নবা এখন ঢাকার সায়দাবাদে ষাটোর্ধ্ব খালার কাছে বস্তিতে বসবাস করছে। পরিবারটি খালাতো বোন শিল্পীর রোজগারের ওপর নির্ভর করে চলে। স্বামী পরিত্যক্তা এই নারী সায়দাবাদ বস্তিতে শিশুদের বাইসাইকেল মেরামত ও ভাড়া দিয়ে দিনে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা আয় করে সংসার চালান।
শিল্পী বলেন, ‘জয়নবা লেবাননে বড় হয়েছে। শিশুটি জানে না, তার চাওয়া-পাওয়া আমার পক্ষে মেটানো সম্ভব না। কোনো কিছুর বায়না করলে আমি তা দিতে পারি না। আবার জয়নবার মা নেই, বাবাও পাকিস্তানি। আমি এখন তাকে নিয়ে কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না। যদি সরকার বা সমাজের বিত্তবানরা এতিম জয়নবার পাশে দাঁড়ায় তাহলে সে হয়তো একটি সুন্দর জীবন পাবে।’