হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনায় চট্টগ্রামের পটিয়ায় করা মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের কয়েকজন কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক বলে জানিয়েছে বাহিনীটি।
এরা হেফাজত সংশ্লিষ্ট হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সুনির্দিষ্টভাবে সাংগঠনিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
শনিবার রাত আটটায় তাদেরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম মজুমদার।
যারা ধরা পড়েছেন তারা হলেন মুফতি আরিফুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, ইমতিয়াজ হোসেন, বেলাল উদ্দিন ও খোরশেদ আলম।
ওসি রেজাউল জানান, ২৬ মার্চ পটিয়া থানায় হামলা মামলায় গত রাতে পটিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতে তোলা হলে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ওই হামলার ঘটনায় করা মামলায় হেফাজতের কারও নাম ছিল না। তবে কেবল পটিয়া নয়, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ- কোথাও নাশকতার ঘটনায় করা মামলায় হেফাজতের কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। যদিও পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ জানিয়েছেন, তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, ধরা হবে তাদেরই।
পটিয়া পুলিশ জানাচ্ছে, প্রাথমিক তদন্তে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েই এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভের পর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় হেফাজতে ইসলাম ও সমমনা ইসলামী দলের নেতা-কর্মীরা। ফাইল ছবি
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের দিন ঢাকায় বায়তুল মোকাররম এলাকায় সরকার সমর্থকদের সঙ্গে কওমিপন্থিদের সংঘর্ষ হয়। এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে তাণ্ডব চালায় হেফাজত কর্মীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়, আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে আগুন দেয়া হয়। হামলা হয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়েও।
হাটহাজারীতে ডাকবাংলো, এসিল্যান্ড অফিসের পাশাপাশি হামলা চলে স্থানীয় থানায়।
পটিয়া থানার ওসি বলেন, ‘২৬ মার্চ বিকেলে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডবে হতাহতের ঘটনার রেশ ধরে পটিয়া থানায় হামলা চালায় হেফাজতে ইসলামের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৩০ মার্চ অজ্ঞাত ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করে। সেই মামলায় এদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
শুরুতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হেফাজত সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার না করলেও গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্টে হেফাজত নেতা মামুনুল হক সঙ্গীনি নিয়ে অবরুদ্ধ হওয়ার পর তাণ্ডবের পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।
নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হাটহাজারীতে হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আটক হয়েছেন। কাউকে গ্রেপ্তার করা হলে ব্যাপক আন্দোলনের হুমকি দেয়া হেফাজত মামুনুল কাণ্ডের পর অবশ্য চুপসে গেছে।