বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জে গ্রেপ্তার ৬১

  •    
  • ৯ এপ্রিল, ২০২১ ২৩:০৫

নারায়ণগঞ্জে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৩ জন হেফাজতের নেতা-কর্মী থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে হেফাজতের কোনো নেতা-কর্মী নেই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় মোট ৬১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৫ জনকে এবং নারায়ণগঞ্জে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জে গ্রেপ্তার ৬ জনের মধ্যে তিনজন হেফাজতের নেতা-কর্মী। বাকি তিনজন বিএনপির।ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৬ মার্চ থেকে কয়েক দফায় তাণ্ডবের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন থানায় ৪৯টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি ৩৫ হাজার।

এসব মামলায় নাম উল্লেখ করে ২৮৮ জনকে এবং অজ্ঞাতনামা ৩৫ হাজার লোককে আসামি করা হয়। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার ১৬ জনসহ এসব মামলায় মোট ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রেপ্তার ৫৫ জনের মধ্যে হেফাজতে ইসলামের কোনো নেতাকর্মী নেই।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক সাঈদ হাসান সানি ও ২৮ মার্চ হেফাজতের হরতালের দিন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুরকারী আরমান আলিফ।

জানা যায়, আলিফকে গ্রেপ্তারের পর তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাজীপাড়ার ভাড়াটিয়া বাসায় তল্লাশি চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙার কাজে ব্যবহৃত একটি শাবল, একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন এবং চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবের সময় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে আগুন দেয়া হয়

পুলিশ ও মামলার নথিপত্র সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘটে যাওয়া তাণ্ডবে ৪৯টি মামলার মধ্যে সদর থানায় ৪৩টি, আশুগঞ্জ থানায় তিনটি, সরাইল থানায় দুটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আখাউড়া রেলওয়ে থানায় একটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে ৩৯টি মামলার আসামী সবাই ‘অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারী’।

বাকি ১০টি মামলায় ২৮৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। কোনো কোনো মামলায় ‘অজ্ঞাতনামা কওমি মাদ্রাসাছাত্র-শিক্ষক ও তাদের অনুসারী দুষ্কৃতিকারীদের’ কথা উল্লেখ করা হয়। তবে কোনো মামলাতেই হেফাজতের কোনো নেতাকর্মীর নাম নেই।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রহিম বলেন, তাণ্ডবের সময়ের ভিডিও ফুটেজ ও স্থির ছবি দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

এদিকে শুক্রবার দুপুরে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হেফাজতে ইসলামের সহিংস ঘটনায় বিভিন্ন স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদেরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

এ পর্যন্ত ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বাকি আসামিদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য জেলা পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থাাপিত বঙ্গবন্ধুর দুটি ম্যুরাল, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের অফিস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কার্যালয়, পৌর মেয়রের বাসভবন, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়সহ অর্ধশতাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

এদিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে এক নারীসহ হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হককে আটকের পর সেখানে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগে সংগঠনটির তিন নেতাকর্মীকে শুক্রবার গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

এ ছাড়া ২৮ মার্চ হরতালের দিন সিদ্ধিরগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় বিএনপির তিন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সবাইকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হেফাজত নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ ওরফে সাইফ, হেফাজত কর্মী কাজি সমির ও তাবলীগ জামাতের সদস্য অহিদকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের সবাইকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল পর্যন্ত সহিংসতার অভিযোগে পুলিশ ও র‌্যাবের করা মামলায় বিএনপি নেতাসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, হরতালে সহিংসতার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্র দলের সাবেক সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন আনোয়ার (৩৯), নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নং ওয়ার্ড বিএনপি সদস্য মো. মামুন মিয়া (৩৯), ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক ফারুক হোসেন (৪০) কে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে মোফাজ্জল হোসেন আনোয়ার এজাহারনামীয় আসামী। অন্য দুইজন অজ্ঞাত আসামি হিসেবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদেরকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত।

এ বিভাগের আরো খবর