হরতাল ও মামুনুল হকের রিসোর্ট কাণ্ডের জেরে নারায়ণঞ্জে সহিংসতার জন্য হেফাজতে ইসলামের অতি উৎসাহী নেতা-কর্মীদের দায়ী করেছেন ধর্মভিত্তিক সংগঠনটির নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, অতি উৎসাহীদের ভুলের মাসুল হেফাজতকে দিতে হচ্ছে।
শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় ডিআইসি জামে মসজিদে জুম্মার নামাজের বয়ানে এসব কথা বলেন আউয়াল।
‘আফসোস হলো আমাদের মধ্যে অনেক অতি উৎসাহী রয়েছেন, আর তাদের ভুলের মাসুল এখন আমাদের দিতে হচ্ছে।
‘বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগল, গাড়ি ভাঙচুর হলো-এ সমস্ত কর্মকান্ড আমরা দেখেছি। কিন্তু এগুলো কারা করেছে? এই সব করেছে দুই দল। একটা হলো আমাদের দলের অতি উৎসাহীরা ও আরেক দল হলো আমাদের কলুষিত করার জন্য যারা মাঠে কাজ করে তারা।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব জন্মশত বর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের পর গত ২৮ মার্চ সারাদেশে হরতাল দেয় হেফাজত। এদিন নারায়ণগঞ্জ এলাকায় হেফাজত কর্মীদের তাণ্ডবের প্রতিক্রিয়ায় সংগঠন ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেন আউয়াল।
তার পদত্যাগের ঘোষণায় নড়েচড়ে বসা হেফাজত বুধবার বন্দরনগরীতে পাঠায় সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ও অন্য নেতাদের। আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক করে মামুনুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তাদের নায়েবে আমির আবার আগের মতো সংগঠনকে নেতৃত্ব দেবেন।
এর মধ্যে গত শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীসহ স্থানীয়দের হাতে অবরুদ্ধ হন মামুনুল। হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের এ নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে সোনারগাঁ এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় সংগঠনটির কর্মীরা।
হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল। ছবি: সংগৃহীত
আবদুল আউয়াল বলেন, ‘মানুষের জানমালের ক্ষতি করা আগুন দেয়া এটা রাজনীতি নয়। তা হলে এটা কেন করি? ভাঙচুর করা কে আমাদের শেখাল? আমরা এ আন্দোলন পাইলাম কই? কোরআন এবং হাদিসে এ ধরনের আন্দোলন নেই।’
হেফাজতের এই নায়েবে আমির বলেন, ‘আমরা তো আন্দোলন করব সরকারের কাছে দাবি জানাতে। সরকার আমাদের কাওমি মাদ্রসাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, তার কারণ হলো সরকারের ক্ষোভ। দেশের সম্পদ নষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে কাওমি অঙ্গন থেকে ভাঙচুর করা হয়েছিল, এ জন্য তাদের ক্ষোভ। সেই ক্ষোভের কারণে তারা কওমি মাদ্রাসাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে করোনার অজুহাতে।
‘আমি সরকারকে বলব রাগ হইয়া, গোস্যা হইয়া করোনার নামে মাদ্রসাগুলো বন্ধ কইরেন না। আপনাকে রাগ হজম করতে হবে। আপনি তো সরকার প্রধান আপনি রাগ করলে জনগণ কোথায় যাবে?
আউয়াল আরও বলেন, ‘আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, মাদ্রাসাগুলো খুলে দেন সামনে রমজান মাস। একইসঙ্গে আরও দাবি জানাই যারা আগুন দিয়েছে, ভাঙচুর করেছে তাদের ভিডিও দেখে শনাক্ত করুন। কোনো নিরীহ মানুষকে হয়রানি করবেন না।’